বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের একবার ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। ভোটের আগে ছিল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে দলবদলের পালা। কেউ দলে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না কারও বা দম বন্ধ হয়ে আসছিল, ইত্যাদি নানা অভিযোগে দল ছেড়েছিলেন একাধিক বড় নেতা। তালিকায় রয়েছেন সোনালি গুহ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল, সরলা মুর্মু, শুভেন্দু অধিকারীর মতো একাধিক নাম। কিন্তু নির্বাচনে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বিজেপির। আরজে তারপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা দিয়েছেন দলবদলুদের উদ্দেশ্যে। “আসতে চাইলে আসুক না” এই ছোট্ট বাক্যবন্ধকেই এখন বুকে চেপে ধরেছেন অনেকেই। ইতিমধ্যেই বিজেপি থেকে বেরিয়ে এসেছেন দিপেন্দু বিশ্বাসের মতো নেতারা। যাই যাই করছেন আরো অনেকেই। একদিকে যেমন সোজাসুজি টুইটে তৃণমূল নেত্রীকে পত্র লিখেছেন সোনালী গুহ। তেমনি অন্যদিকে দলে ফেরার আর্জি জানিয়েছেন সরলা মুর্মুও।
সরলার বার্তাঃ
দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অপমানিত হয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন সোনালী। এদিন ফের একবার তার চোখে জল। তবে এবার তিনি বলছেন জল ছাড়া যেমন গাছ বাঁচতে পারেনা তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তিনিও নাকি বাঁচতে পারছেন না। অন্যদিকে একই বার্তা সরলারও। নির্বাচনে মালদার হাবিবপুর কেন্দ্র থেকে তাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থী পদ পাওয়ার পরেও দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান সরলা। অনেকেই যদিও জানিয়েছিলেন এর পিছনে যথেষ্ট হাত রয়েছে শুভেন্দুর। তবে সরলার কথায় দলের প্রতি ফেটে পড়েছিল ক্ষোভ। তিনি জানিয়েছিলেন, “তৃণমূলের পদ দেওয়া হয়, কাজ করতে দেওয়া হয় না। আমি বিজেপিতে যোগ দিয়ে শুধু কাজ করতে চাই।” বিজেপিতে তিনি পদ পাননি। কিন্তু প্রায় তার দৌলতেই প্রথম জেলা পরিষদ দখল করে বিজেপি। আর এখন তিনি ঘরে ফিরতে চান। শুধু ঘরে ফেরা নয়, ফিরতে চান জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে। রবিবার চিঠি লিখে তিনি জানান, তাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল তিনি দলে ফিরতে চান।
সরলার আর্জিতে অখুশি মৌসম নুরঃ
সরলার এই দলে ফেরার বিষয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন কুনাল ঘোষ, মৌসম নুর সকলেই। এ বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বিজেপি টা করা যায় না। যদিও এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবু তাদের বোধোদয় হয়েছে ভেবে আমি খুশি। কিন্তু বাধ সাধলেন মালদা জেলার তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম বেনজির নূর। গনি খান পরিবারের এই সদস্যের দাবি, “ওঁকে দলে ফেরানো যাবে না। তিনি এবং তাঁর মত অনেকেই দলের আবর্জনা। তাঁরা চলে যাওয়াতে দল পরিস্কার হয়েছে।” এতদিন দলবদলুদের ফের একবার দলবদলের ক্ষেত্রে বড় বড় রাজনৈতিক নেতা মুখ খোলেননি। কিন্তু এদিন মৌসম স্পষ্ট ভাষায় জানান, “শুধু ক্ষমতা আর পদের জন্য উনি দলে ছিলেন। প্রার্থী হয়েও তিনি দল ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ পুড়িয়েছেন। ওঁকে দলে ফেরানো হবে না। ওর মতো আবর্জনা অন্য দলে যাওয়ায় তৃণমূল পরিষ্কার হয়েছে।”
যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তৃণমূল হাইকম্যান্ড। কিন্তু মৌসুমের বিরোধ যে স্পষ্ট, তা জানাতে ভোলেননি তিনি।