বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২০-র ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দুবাবু (Suvendu Adhikari) যেদিন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেদিনই তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল (Sunil Mondal)। একুশের নির্বাচনে তাঁকে বেশ সক্রিয় ভূমিকাতেও দেখা গিয়েছিল। নিজ এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলকে বারবার আক্রমণও করেছিলেন তিনি। এমনকি ওনাকে নিয়ে তৃণমূল কর্মীরা একেবারে বিজেপির দফতরের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছিল। যাইহোক, সেসব এখন অতীত।
একুশের নির্বাচনে পালা বদল না হওয়ায় সুনীল মণ্ডল এখন বেসুরো হয়েছে। তিনি এখন আবার তৃণমূলে ফেরার রাস্তা খুঁজছেন। আরেকদিকে, তৃণমূল ওনার সাংসদপদ বাতিল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। প্রাক্তন দলের পক্ষ থেকে যখন এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তেমন সেই দলের কর্মীরাও ওনাকে নিয়ে চারিদিকে ‘গদ্দার-মীরজাফর” পোস্টার লাগিয়ে চলেছেন। কিছুকিছু ক্ষেত্রে ওনাকে রাক্ষস রাজা ‘রাবণ” বলেও আখ্যা দিচ্ছে তৃণমূলের কর্মীরা।
কদিন আগেই বিজেপির বিরুদ্ধে বয়ান দিলে পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলেছিলেন, ‘যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁরা দলে মানিয়ে নিতে পারছে না। বিজেপি এখন এদের বিশ্বাস করতে চাইছে না। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম বিজেপি সাংগঠনিক দিক থেকে অনেক বড় দল। কিন্তু এখন আমার সেই ধারণা ভেঙেছে।”
সুনীল মণ্ডল আরও বলেছিলেন, ‘যারা বাইরে থেকে এসে বাংলায় প্রচার চালিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ভাষাগত সমস্যা ছিল। ওঁরা ভেবেছিল বাইরে থেকে বাংলায় এসে দু-চারদিন থেকেই বাংলার মানুষের মন জয় করা সম্ভব। কিন্তু তা হয়নি।” সুনীল মণ্ডল আরও বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা একটিও মানা হয়নি। ওকে নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।”
সুনীল মণ্ডল বেসুরো হতেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে তাঁরই সংসদীয় এলাকায় পোস্টার দিতে শুরু করে। কোথাও তাঁকে বাংলার শত্রু, আবার কোথাও তাঁকে গদ্দার-মীরজাফর বলে আখ্যা দেওয়া হবে। এমনকি জামালপুরে তৃণমূল কর্মীরা রাস্তায় নেমে সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। সাংসদকে দলে ফেরানো নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রদীপ পাল বলেন, ‘সুনীল মণ্ডল বেইমান, গদ্দার! তাঁকে কোনওভাবেই দলে নেওয়া হবে না। আমাদের নেত্রীকে উনি অপমান করেছেন। আমরা চাই না উনি কোনোভাবেই আবার দলে ফিরুক।”
আরেকদিকে, জামালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির আহ্বায়ক জিতেন ডকাল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের দলবদলের জল্পনা নিয়ে বলেন, ‘ওনার নীতি-আদর্শ কিছুই নেই। উনি শুধু ক্ষমতার মধু খেতে চান। বিজেপি পাল্লাভারী থাকার কারণে উনি আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। আমরা জিততে পারিনি বলে উনি আবার তৃণমূলে ফিরে যেতে চাইছেন।” জিতেনবাবুর কথায় এটুকু স্পষ্ট যে, এবার বিজেপিও তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।