বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ত্রাণের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছেন কোমর সমান জলে। করোনা আবহে আগত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস তাণ্ডবে এখন এটাই রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে সুন্দরবনের (sundarban) পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে সকলেরই। যার ফলে বাড়ছে রোগের পরিমাণও। বিশেষত নানারকম স্ত্রীরোগ দেখা দিচ্ছে মহিলাদের।
একে করোনা আবহ, তারউপর ইয়াশের তান্ডবে বন্যা কবলিত হয়ে বর্তমানে ত্রাণের খাবারের উপরই ভরসা সুন্দরবনবাসীদের। গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ সাগর সর্বত্রই একই চিত্র। ইয়াস পরবর্তীতে রোজগারের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন সুন্দরবাসীরা।
পেটের দায়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই, তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে নদীর নোনা ঘোলা জলে। রোগব্যাধি হবে জেনেও, নিরুপায় হয়েই টানা দশ-বারো ঘণ্টা কাটাতে হয় একটি ভেজা কাপড়েই। শুধু ত্রাণ নেওয়াই নয়, রায়মঙ্গল আবার বিদ্যাধরী নদীর জলে মাছ ধরতে গিয়েও অনেকক্ষণ ভেজা কাপড়েই থাকতে হয় মহিলাদের। যার ফলে মহিলাদের জরায়ুর সমস্যার সঙ্গে চর্মরোগ ও মূত্রনালীর সংক্রমণ বেড়েই চলেছে৷
এপ্রসঙ্গে গোসাবার স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ চিত্রলেখা মণ্ডল জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগেও এরকমটা হলেও, এখন এই সমস্যাটা আরও বেড়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ এলাকা জলমগ্ন থাকার কারণে বাড়ির মহিলাদের জলের মধ্যে দাঁড়িয়েই কাজকর্ম করতে হচ্ছে। আবার সংসার চালানোর জন্য অনেককেই জলে নামতে হয়। যার ফলে অনেকক্ষণ নোনা জলে থাকার কারণে জরায়ু, মূত্রনালীর সংক্রমণ ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মহিলারা’।
শরীর খারাপ হবে জেনেও বাধ্য হয়েই জলে নামতে হচ্ছে সুন্দরবনের মহিলাদের। এবিষয়ে মেনকা দাস নামে এক এলাকাবাসী জানান, ‘সকাল থেকে সন্ধ্যে ৭ টা পর্যন্ত আমরা জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকি। ত্রাণের নৌকা এলে, সেখান থেকে খাবার জোগাড় করতে হয়। অসুখ বিসুখ বাড়বে জেনেও, কি করব, যেতে হয়’।