নির্বাচনে শূন্য হলেও বিধান পরিষদে বাম-কংগ্রেসকে জায়গা করে দিতে চান মমতা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার সময় থেকেই বাংলায় বিধান পরিষদ চালু করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ১৯৬৯ সালের আগে বাংলায় বিধান পরিষদ থাকলেও তারপর থেকে তার আর অস্তিত্ব ছিলনা। এবার একুশের নির্বাচনে টিকিট বিতরণের সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠন করা হবে। এদিন ভোটাভুটিতে বিধান পরিষদের প্রস্তাব পাশ হয়েছে বিধানসভাতেও। রাজ্যের দুই তৃতীয়াংশ বিধায়কই মত দিয়েছেন বিধান পরিষদের পক্ষে। পক্ষে মত দেন ১৯৬ জন। বিপক্ষে মত দেন ৬৯ জন।

যদিও বিধানসভার পর আবার নতুন করে বিধান পরিষদ গঠনের বিপক্ষেই রায় দিয়েছেন বেশিরভাগ বিজেপি বিধায়ক। বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, “বিধায়কদের উপরে কি ভরসা নেই?” একে কোভিড, তার ওপর রাজ্যের মাথায় কোটি কোটি টাকার দেনা এই মুহূর্তে বাড়তি খরচের কি প্রয়োজন? একই বক্তব্য কোচবিহার দক্ষিণের বর্তমান বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীরও। অন্যদিকে বিজেপির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে আইএসএফও। বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, এই মুহূর্তে বিধান পরিষদ গঠন মানে সাদা হাতি পোষা।

পাল্টা এর উত্তর দিয়েছে তৃণমূল। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধানসভায় হেরে রাজ্যসভায় যাচ্ছেন, এমন ভূরি ভূরি উদাহরণ আছে। সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধিতা থাকতে পারে। কিন্তু তাদের শূন্য হওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। রাজ্যের জন্য কিছু করতে গেলে সংসদের জোর দেখিয়ে আটকে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। বিরোধী বিধায়ক বলছেন, লোকসভায় আটকে দেবেন। রাজনীতি করব, অথচ বাংলার কথা ভাবব না, এটা হতে পারে না।’’ শুধু তাই নয় তিনি এক্ষেত্রে কর্ণাটক, লে এবং উত্তর প্রদেশের কথাও টেনে আনেন। সেখানেও বিধান পরিষদ রয়েছে।

যদিও রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হলেই বিধান পরিষদ গঠন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে রাজ্যপালের স্বাক্ষর প্রয়োজন, লোকসভা এবং রাজ্যসভায় প্রস্তাব পাশ হওয়া প্রয়োজন এবং সর্বশেষে প্রয়োজন রাষ্ট্রপতির সম্মতি। তাই বিধানসভায় পাশ হলেও লোকসভা রাজ্যসভায় আটকে যেতে পারে এই প্রস্তাব। বিধান পরিষদ গঠনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন তিনি বলেন,  ‘‘বিধান পরিষদ গঠন করলে অর্থের অপচয় হবে। ৫ বছরে ৬০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা খরচ হবে। শাসকদল ঘনিষ্ঠ যাঁরা জিততে পারেননি, পিছনের দরজা দিয়ে তাঁদের জায়গা করে দিতেই বিধান পরিষদ চালুর চেষ্টা।’’

brigade rally abbas

তবে বিধান পরিষদে তৃণমূল যে কংগ্রেস এবং সিপিএমের প্রতিনিধিও রাখতে চায় আজ তা এক প্রকার পরিষ্কার করে দিয়েছে তারা। স্পষ্ট জানানো হয়েছে, কোন দলের একেবারে শূন্য হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। তাই প্রতিনিধি থাকা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্য বিজেপির অমত প্রদর্শনে একথা মোটামুটি পরিষ্কার যে রাজ্যসভা এবং লোকসভায় যথেষ্ট ধাক্কা খেতে হবে বিধান পরিষদের এই প্রস্তাবকে। যদিও আগামী দিনে কি হয় তার উত্তর দেবে সময়ই।

 

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর