বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হিন্দুদেবতা শিবের (shiva) অপর নাম হল মুরুদেশ্বর (Murdeshwar)। আরব সাগরের তীরে অবস্থিত অর্থাৎ দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের উত্তর কন্নড় জেলার ভটকল তহশিল এই মুরুদেশ্বর মন্দির এবং শিব মূর্তির জন্য প্রসিদ্ধ। এই শিব মূর্তিটি বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শিব মূর্তি হিসেবে পরিচিত।
কথিত আছে, হিন্দু দেবদেবীদের মত রাজা রাবণেরও অমরত্বলাভের ইচ্ছা হয়েছিল। যে কারণে তিনি শিবের আত্মার প্রতীক আত্মালিঙ্গ পূজনে ব্রতী হন। এইভাবে প্রতিদিন মহাদেবের পুজো করায় দেবাদিদেব তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে একটি বর দান করেন। মহাদেবের থেকে আত্মালিঙ্গ প্রাপ্তির ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাবণ।
রাবণের ইচ্ছা শুনে শিব সম্মতিদান করেন ও পূর্বসতর্ক করে দেন, রাবণ যদি এই মূর্তি তাঁর রাজ্যে গিয়ে স্থাপন না করে, তাহলে যেখানেই ভূস্পর্শ করবে এই মূর্তি, সেখানেই স্থায়ী হয়ে যাবে। বর পেয়ে আত্মালিঙ্গসহ রাবণ নিজের রাজ্যে দিকে যাত্রা শুরু করেন রাবণ।
এমন সময় শ্রী বিষ্ণু রাবণের এই অভিসন্ধি ভেস্তে দেওয়ার জন্য শিবপুত্র গণেশকে প্রেরণ করেন। স্কন্দপুর্বজ রাবণের একটি অভ্যাসের কথা আগে থাকতেই জানতেন। রাবণ কখনই তাঁর সান্ধ্য-আহ্নিক সব দৈনিক অন্যান্য পূজার কাজ অসম্পূর্ণ রাখেন না। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগালেন ভগবান বিষ্ণু। গোকর্ণের নিকট রাবণ উপস্থিত হতেই, সেখানে মায়াবলে ছদ্মসূর্যাস্ত ও সান্ধ্য আবহাওয়ার প্রকাশ ঘটান ভগবান বিষ্ণু।
এমন সময় রাবণ নিজের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য বিচলিত হয়ে পড়েন। আর ঠিক সেই সময় সেখানে গণেশ এসে উপস্থিত হন। গণেশের কাছেই রাবণ পূজার্চনার কাজ সম্পন্ন না হওয়া অবধি তাঁকে আত্মালিঙ্গের দায়িত্ব প্রদান করেন। তবে গণেশ একটি শর্ত রাখেন। তিনি বলেন, তিন বার ডাকার পরও যদি বারণ সেখানে উপস্থিত না হন, তাহলে তিনি সেই মূর্তি সেখানেই রেখে দেবেন।
এরপর মায়ার দ্বারা সূর্যদয় ঘটনা ভগবান বিষ্ণু। আর পূর্ব শর্ত মত রাবণকেও তিন বার ডাকার পর সাড়া না পেয়ে সেখানেই মূর্তি রেখে চলে যান গণেশ। তাঁর বিরুদ্ধে ছল করা হয়েছে, তা আন্দাজ করতে পেরে লিঙ্গ উদ্ধারের চেষ্টা করেন রাবণ। সেই সময় লিঙ্গের একটি টুকরো সুরাৎকলে এসে পড়ে ও প্রতিষ্ঠা পায় সদাশিব মন্দির। লিঙ্গমুখারকটি নষ্ট করার চেষ্টা করলে তা ৩৭ কিলোমিটার দূর সজ্জেশ্বরে পতিত হয়। আর শেষে রাবণের ছুঁড়ে ফেলা আত্মালিঙ্গের বস্ত্র কণ্ডুকাগিরি অঞ্চলের মৃৃধেশ্বরে পতিত হয়। আর মৃৃধেশ্বর ধীরে ধীরে মুরুদেশ্বর নামে পরিণত হয়।