বাংলাহান্ট ডেস্কঃ কথায় বলে ‘উপরওয়ালা যব দেতা হ্যায় ছাপ্পড় ফাড়কে দেতা হ্যায়’। বাস্তবেও খানিকটা সেরকমই ঘটনা ঘটল মালদহ (malda) শহরের বিএস রোড এলাকার জগদ্ধাত্রী তলার বাসিন্দা পেশায় ব্যান্ডপার্টির বাজনা বাদক শঙ্কু ঋষির সঙ্গে। অভাবের তাড়নায় যখন আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ঠিক সেই সময়ই ভগবানের আশীর্বাদে হয়ে গেলেন কোটিপতি। শুনে সিলভার স্ক্রীনের কোন গল্প বলে মনে হলেও, একবারে ধ্রুব সত্য।
বিষয়টা হল, মালদহ শহরের বিএস রোড এলাকার জগদ্ধাত্রী তলার বাসিন্দা পেশায় ব্যান্ডপার্টির বাজনা বাদক শঙ্কু ঋষি বেশ কিছুদিন ধরেই চরম দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। একটি ছোট্ট ঘরে কষ্ট করে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়েই তাঁর সংসার।
এরই মধ্যে তাঁর দারিদ্রতার সঙ্গী হল লকডাউনের কর্মসংকট। করোনা আবহে কাজ হারিয়ে চরম সংকটে দিন কাটছিল তাঁদের। পরিবারের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে রাজমিস্ত্রির কাজে ঢুলকেও, তাতে কোন রকমে সংসার চললেও, অভাব কিছুতেই তাঁর পিছু ছাড়ছিল না।
এসবের মধ্যে শঙ্কু ঋষি সিদ্ধান্ত নেন লটারির টিকিটের ব্যাবসা করবেন। সেইমত ছোট ছেলের অন্নপ্রাশনে দেওয়া সোনার লকেট বিক্রি করে, একটা লটারির টিকিটের দোকান দিলেন বিএস রোড জগদ্ধাত্রী তলায়। কিন্তু সেখানেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছিলেন না তিনি। গত শুক্রবার বৃষ্টির জেরে বারশো টাকার ক্ষতি হওয়ার পর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর সোমবার আবারও দোকান খোলেন এবং সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেলেও একটি রয়ে যায়। আর নিজের ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে সেই টিকিট নিজের কাছেই রেখে দেন শঙ্কু ঋষি।
কয়েক ঘণ্টা পরই ডিস্ট্রিবিউটারের কাছ ফোন আসে, তাঁর কাছে থাকা টিকিটেই বেঁধে গিয়েছে প্রথম পুরস্কার এক কোটি টাকা। শুনেই যেন আকাশ থেকে পড়েন শঙ্কু ঋষি। তাঁর এই আনন্দের সময় সকলেই তাঁকে অভিনন্দন জানান। শঙ্কু জানান, ‘আমার দুঃখ দুর্দশা দেখে ভগবান মুখ তুলে চেয়েছেন। এই টাকা দিয়ে একটা ভালো বাড়ি বানিয়ে বাবা মায়ের চিকিৎসা করাব, বাচ্চাদের লেখাপড়া করাব এটাই স্বপ্ন। তবে আবারও বাজনা বাজানোতেই ফিরে যাব আমি। সরকারের নিয়ম মেনে এই টাকা হাতে পেলেই আমি খুশি’।