বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ‘রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (buddhadeb bhattacharjee) আমার জামাইবাবু’- এমনটাই দাবি করলেন ফুটপাথবাসী এক ইরা বসু। প্রাথমিক দৃষ্টিতে তাঁকে দেখে এই মন্তব্য বিশ্বাস করা খুবই কঠিন। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর অনর্গল ইংরেজি এবং সঙ্গে বাংলা বলার ধরণ এবং খড়দহের নামী স্কুলে শিক্ষিকা থাকার পরিচয়ে, তা বিশ্বাসযোগ্য হয়।
প্রাথমিক দৃষ্টিতে তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই মনে হবে। কারণ, পরনে ধুলো কাদা মাখা নীল রঙের নোংরা নাইটি, উস্কোখুস্কো, জটপড়া চুল, খালি পায়ে এবং কাঁধে একটা ঝুলি নিয়ে গত প্রায় ১ বছর ধরে ডানলপ মোড়ই হল তাঁর ঠিকানা। সেখানেই পাগলের মত রাস্তার এপাশ ওপাশ ঘুরে বেড়ান আর কোন দোকানের সামনে নিজের ঝোলা নিয়ে বসে পড়েন। দোকনাদের মুখ ঝামটা আর পথচারীদের চোখ টাটানোই পান তিনি।
তবে এই পথের বাসিন্দা ইরা বসু দাবি করেছেন তাঁর দিদি হলেন মীরা ভট্টাচার্য, যিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর স্ত্রী এবং নিজেকে খড়দহ প্রিয়নাথ গার্লস হাইস্কুলের জীবনবিজ্ঞানের প্রাক্তন শিক্ষিকা হিসেবেও দাবী করেছেন। তবে তাঁর কথায় বারবার উঠে এসেছে, জামাইবাবু হলেও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর থেকে কোনদিন কোন সুযোগ সুবিধা নেননি তিনি। আর তাঁর জামাইবাবুর মতন মানুষ হয় না।
বয়স সত্তরের কাছাকাছি ইরা বসু ২০০৯ সালের ৩১ শে জানুয়ারি চাকরি জীবন থেকে অবসর নেন। তবে চাকরি করাকালীন তাঁর ঠিকানা ছিল খড়দহের লিচুবাগানের বাড়ি। কিন্তু বর্তমানে শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে ফুটপাথ পেরিয়ে এখন ডানলপ মোড়। তবে তিনি যে খড়দহ প্রিয়নাথ গার্লস হাইস্কুলে সম্মানের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছিলেন তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে।
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা জানিয়েছেন, ‘ওনাকে অনেকবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলেও, উনি আসেননি। অবসরের পর পেনশন পাওয়ার জন্য ঠিক মত কাজগপত্রও জমা দেননি উনি। তবে প্রধান শিক্ষিকার চেষ্টায় পিএফের টাকাটা শুধু পেয়েছিলেন’।