বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ (Ram Nath Kovind) যেই ব্যক্তিদের পদ্মশ্রী (Padma Shri) পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলি জাহির (Quazi Sajjad Ali Zahir)। বাংলাদেশের (Bangladesh) মুক্তিযুদ্ধের এই নায়ককে পাকিস্তান (Pakistan) ৫০ বছর ধরে খুঁজছিল। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তিনি প্রাণ বাঁচিয়ে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আসতে সক্ষম হন। এমনও শোনা যায় যে, উনি পাকিস্তানি সেনার অনেক গোপন তথ্য ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। পাকিস্তানি সেনা কর্নেল কাজীর বাড়িঘর পর্যন্ত জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ওনার মা-বোনকে নিশানা করেছিল পাক সেনা। কিন্তু তাঁরাও কোনও ক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে ভারতে আসতে সক্ষম হন।
কর্নেল কাজী ছাড়াও আরও দুজন বাংলাদেশি নাগরিক সানজিদা খাতুন ও মুয়াজ্জাম আলিকেও পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। কর্নেল কাজী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছিলেন। পাকিস্তানে ওনার নামে ওয়ারেন্টও জারি হয়েছিল একসময়। তাঁকে জীবিত বা মৃত সামনে আনতে পারলে পুরস্কারও দিত পাকিস্তান সরকার।
President Kovind presents Padma Shri to Lt Col Quazi Sajjad Ali Zahir (Retd.) for Public Affairs. He is an independent researcher and author on the Bangladesh Liberation War. He joined the War of Liberation and participated in many battles alongside the Indian Army. pic.twitter.com/xhuCupSCto
— President of India (@rashtrapatibhvn) November 9, 2021
কর্নেল কাজী ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানি সেনায় নাম লিখিয়েছিলেন। সেই সময় বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা অধুনা বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনার বর্বরতা সেই সময় তুঙ্গে ছিল। আর সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই বাংলাদেশিরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নামে। তখনই কর্নেল কাজী নিজের দেশের সেনার বিরুদ্ধে সরব হন আর পাকিস্তান থেকে পালিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। কর্নেল ভারতে চলে আসার পর পাকিস্তানি সেনা বাংলাদেশে তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাঁর মা-বোনকেও টার্গেট করা হয়। কিন্তু তাঁরাও প্রাণ বাঁচিয়ে ভারতে আসতে সক্ষম হন।
ভারতের হাত ধরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কর্নেল কাজী একটি সংগঠন বানিয়েছিলেন। সেই সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে শামিল থাকা ভারতীয় আর বাংলাদেশিদের সনাক্ত করার কাজ করত। উনি আজও বাংলাদেশে মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছেন। ওনার মতে বাংলাদেশ যখন এই মৌলবাদ আর বিদেশি শক্তির থেকে মুক্তি পাবে, তখনই আমার দেশ প্রকৃত ভাবে স্বাধীন হবে।