বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: খারাপ খবর দক্ষিণ ভারতের অধিবাসীদের জন্য। আগামী বছরেও সেই অঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে আবারও নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের মারাত্মক তান্ডব দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর আমফানের প্রকোপে দক্ষিণ ভারতের অনেক রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চলেছিল। এই বছরের মে মাসেও পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি রাজ্যগুলিতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে। কিন্তু এখন দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলে জাওয়াদ নামক একটি নতুন ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। এই নতুন আতঙ্ক অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকায় হানতে পারে মারাত্মক আঘাত। এর বড় প্রভাব ভারী বর্ষণেরও সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের জাওয়াদ নামকরণ করেছে ‘সৌদি আরব’। আরবী থেকে এর বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘উদার’ অথবা ‘সদয়’। তবে নামের মানে এরকম হলেও এই ঝড়ের নামের অর্থের চেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত স্বভাবের হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে এটি অন্য সাধারণ ঝড়ের চেয়ে অনেক বেশি বিধ্বংসী বা ধ্বংসাত্মক হবে বলে মনে করা হচ্ছে না। তবে সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী এটি একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এই প্রকার ঝড়ের উপদ্রব শুরু হয় ২০০৪ সালে, যখন ভারতের উদ্যোগে ৮টি উপকূলীয় দেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ওমান এবং থাইল্যান্ড একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ইংরেজি বর্ণমালা অনুসারে সদস্য দেশগুলোর নামের প্রথম অক্ষর অনুযায়ী তাদের ক্রম নির্ধারণ করা হয়। ঘূর্ণিঝড়টি এই আটটি দেশের যে কোনও অঞ্চলে পৌঁছানোর সাথে সাথেই পালা করে একটি আলাদা নাম দেওয়া হয় ঘূর্ণিঝড়টিকে।
এই প্রক্রিয়াটি শুনতে মজার মনে হলেও এর প্রকৃত উদ্দেশ্য হল ঝড়কে সহজে শনাক্ত করা। এটি ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের হিসাব রাখতেও অনেক সাহায্য করে। ঝড়ে একই নাম বারবার হয় না। এ পর্যন্ত ৬০টির বেশি ঘূর্ণিঝড়ের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
আসলে একটি চুক্তির আওতায় ঝড়ের নাম রাখা হয়। এই উদ্যোগটি ১৯৫৩ সালে আটলান্টিক অঞ্চলে একটি চুক্তির মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। আটলান্টিক অঞ্চলে হ্যারিকেন এবং ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ঐতিহ্য ১৯৫৩ সাল থেকেই অব্যাহত রয়েছে। এটি মিয়ামির জাতীয় হারিকেন সেন্টারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল। বিশেষ বিষয় হলো ১৯৫৩ সাল থেকে আমেরিকা শুধু নারীদের নামে ঝড়ের নাম করত আর অস্ট্রেলিয়া শুধু দুর্নীতিবাজ নেতাদের নামে। যাইহোক, ১৯৭৯ সাল থেকে, একটি পুরুষ এবং পরে একটি মহিলার নামে রাখা হয়।