বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২১-এ করোনা মহামারী মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছিল। এতদসত্ত্বেও বিজ্ঞানীরা শুধু ভ্যাকসিন ও ওষুধ তৈরি করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বকে শক্তিশালী করেননি, অন্যান্য ক্ষেত্রে গবেষণা চালিয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। ভারতের মহাকাশ সংস্থা ইসরোও এই বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে অনেক কৃতিত্ব অর্জন করেছে। আজ আমরা এখানে সেগুলোর মধ্যে কিছু উল্লেখ করতে যাচ্ছি …
২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১-এ ইসরো PSLV-C51 থেকে UNITYsat লঞ্চ করে। এটি ছিল পড়ুয়াদের দ্বারা তৈরি একটি উপগ্রহ যা নিজের সাথে নিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিলের স্যাটেলাইট অ্যামাজোনিয়া-১ সহ আরও ১৮টি স্যাটেলাইট। এই মিশনে আমেরিকারও ১৩টি স্যাটেলাইট ছিল। এটি ছিল ২০২১ সালে ISRO-র প্রথম উৎক্ষেপণ। এই উৎক্ষেপণে ভগবদ্গীতা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবিও মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। এই সফল উৎক্ষেপণের ফলে ভারতের দ্বারা উৎক্ষেপিত বিদেশী উপগ্রহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪২।
#WATCH ISRO's PSLV-C51 carrying Amazonia-1 and 18 other satellites lifts off from Satish Dhawan Space Centre, Sriharikota pic.twitter.com/jtyQUYi1O0
— ANI (@ANI) February 28, 2021
ISRO-এর চন্দ্রযান-২ চাঁদের মেরু অঞ্চলে (যা চাঁদের অন্ধকার দিক নামেও পরিচিত) জলের বরফ আবিষ্কার করেছে। চন্দ্রযান-২ চাঁদের সেই অংশে জলের বরফ আবিষ্কার করেছে যা সবসময় অন্ধকারে থাকে। চাঁদের উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সবসময় অন্ধকারে থাকে কারণ এই অঞ্চলে সূর্যের আলো নেই। এটি চাঁদের পৃষ্ঠের সবচেয়ে ঠান্ডা অঞ্চল।
ইসরো বিজ্ঞানীরা এই বছর বৃহস্পতির চেয়ে ১.৪ গুণ বড় একটি এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কার করেছেন। আহমেদাবাদের মহাকাশ বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান গবেষণা ল্যাবরেটরি (পিআরএল) এই এক্সোপ্ল্যানেটটি আবিষ্কার করেছে। ২০১৮ সালের পর ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এই বছর নতুন একটি এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কার করেছেন।
ভারতের মঙ্গলযান মার্স অরবিটার মিশনে মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে ৭ বছর পূর্ণ করেছে। এটি লক্ষণীয় যে, মঙ্গলযানটিকে শুধুমাত্র ৬ মাসের একটি মিশনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। আপনাদের বলে দিই যে, এই মিশনটি ৫ নভেম্বর, ২০১৩ সালে লঞ্চ হয়েছিল এবং এটি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে মঙ্গল গ্রহের এক রাউন্ড সম্পূর্ণ করেছিল। এছাড়াও, ISRO ২০২১ সালে একটি ২ দিনের চন্দ্র বিজ্ঞান কর্মশালার আয়োজন করেছিল। এই কর্মশালার সময় ISRO প্রধান কে. সিভান জানান যে চন্দ্রযান-২ চাঁদের ৯০০০ চক্কর সম্পন্ন করেছে।
কোভিড-১৯ এর সঙ্গে লড়ছে গোটা বিশ্ব। ISRO-ও দেশবাসীকে সাহায্য করার উদ্যোগ নিয়ে ৩টি ভেন্টিলেটর তৈরি করে। ইসরো তাদের ক্লিনিকাল ব্যবহারের জন্য এই ভেন্টিলেটরগুলির প্রযুক্তি ভাগ করার প্রস্তাবও দিয়েছে। এই ভেন্টিলেটরগুলো কম খরচে তৈরি করা হয়েছে এবং এগুলো বহনযোগ্যও।
২০২১ সালে ISRO তার মার্চেন্ডাইজার প্রোগ্রামও চালু করেছে। সাধারণ মানুষ ইসরোর কাস্টমাইজড টি-শার্ট, কাপ, কি-চেইন ইত্যাদি কিনতে পারবে। আমরা আশা করছি যে, ২০২২ সালে ISRO বিজ্ঞানীরা আরও সাফল্য অর্জন করবে।