বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভারত (india) প্রধানত একটি কৃষিপ্রধান দেশ। প্রাচীনকাল থেকেই দেখা গিয়েছে, এখানে মানুষ নিজের জীবন ধারণের জন্য কৃষিকাজের (Farming) উপরই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। যদিও তা কখনও মানুষের জীবনে নানা সমস্যাও ডেকে এনেছে, তবে কৃষিকাজকেই প্রাধান্য দিয়েছে মানুষজন।
অনেক সময়ই দেখা গিয়েছে, অতীতে এই কৃষিকাজের জন্য জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিতে হয়েছে কৃষকদের। খারাপ ফসল হওয়ার কারণে, মহাজনের ধারের অর্থ শোধ না দিতে পারায় প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন অনেক গরীব কৃষক। তবে এমন অনেক কৃষিকাজ আছে, যা থেকে কৃষক লাখ কোটি টাকাও উপার্জন করতে পারবেন। যে ফসলের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক।
সেরকমই একটি গাছ হল পপুলার গাছ (Poplar Tree)। শুধুমাত্র ভারত নয়, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকাতে পাওয়া যায় এই গাছ। বহুল ব্যবহৃত এই গাছের চাহিদাও রয়েছে বেশ ভালোই। কাগজ, হালকা প্লাইউড, চপ স্টিক, বাক্স, ম্যাচ ইত্যাদি তৈরি করা যায় এই গাছ থেকেই।
এই গাছ চাষের জন্য যে আবহাওয়া প্রয়োজন, তা ভারতে যথেষ্ট পরিমাণেই রয়েছে। প্রয়োজন সরাসরি সূর্যালোকের, ৫-৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা, জমির মাটি 6 থেকে 8.5 pH এর মধ্যে হতে হবে, যা ভারতে উপযোগী। এই গাছ নীচের মাটি থেকে সহজেই আর্দ্রতা অর্জন করতে সক্ষম। তুষারপাতের জায়গায় এই গাছ জন্মাতে পারে না।
তবে এমন নয় যে, যে জমিতে এই গাছ লাগাবেন, সেখানে শুধু এই গাছই চাষ করতে হবে। প্রয়োজনে আপনি এই গাছের চাষের সঙ্গে গম, আখ, হলুদ, আলু, ধনে, টমেটো ইত্যাদিও চাষ করতে পারেন। যার ফলে দুদিক থেকে আপনার আয় ভালোই হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যাতে দুটি গাছের মধ্যেকার দূরত্ব ১২ থেকে ১৫ ফুট হয়। আর এই মাঝের জায়গার মধ্যে আপনি অন্য কোন ফসল অনায়াসেই চাষ করতে পারবেন।
দেরাদুনের বন গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়, গোবিন্দ বল্লভ পন্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মোদিপুরে অবস্থিত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ইত্যাদি কেন্দ্র থেকে এই পপুলার গাছ কিনে এনে বেশিদিন অপেক্ষা না করে, ৪ দিনের মধ্যেই চারা লাগিয়ে দিতে হবে। নাহলে সমস্যা হতে পারে।
এই গাছের চাষ করে আপনি গাছের কাঠ কুইন্টাল প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারবেন। এই গাছের লগ অনায়াসেই ২০০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। প্রতি হেক্টর চাষ করে ৬-৭ লক্ষ টাকা উপার্জন করা সম্ভব। হিসেব বলছে, এক হেক্টর জমিতে ২৫০ টা গাছ লাগানো যায়। প্রায় ৮০ ফুট করে লম্বা হয় এই গাছ।