বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছরের প্রথম মাসেই উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়িতে ঘটে গেল ভয়াবহ এক রেল দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি আহত কত এখনো তা জানা যায়নি। সন্ধ্যা নেমে আসায় উদ্ধারকার্যে বাধা আসছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন রেলের কর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষরা।
এই দুর্ঘটনার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর কানে যেতেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ফোনে প্রশাসনকে জরুরী নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি তিনি সমস্তরকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। প্রশাসনকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকার্য চালানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবার এই নিয়ে কেন্দ্রকে দুষলেন তৃণমূলের যুব নেতা তথা মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, ‘ বছরের শুরুতেই বড্ড বাজে খবর.. দিনের পর দিন ভাড়া বাড়ে, বাজেট আসে, বাজেট যায়, ঝরঝরে বয়স্ক কোচ গুলোই যাত্রী বহন করতে থাকে; মান্ধাতার আমলের নীল ট্রেনের উপর হলুদ রং করে যুবক বানানোর বৃথা চেষ্টা চলে রোজ। ৩০০ কিমি গতির বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন দেখা দেশে ৪০ কিমি গতির ট্রেন উল্টে যায়! রামের নামে ভোটের পর ভোট পার হয়, নিরাপত্তা থেকে যায় সেই তিমিরেই!”
দেবাংশু আরও লেখেন, ‘নিজেও দিন চারেক আগে উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরেছি। এই হলুদ ঝরঝরে কামড়ায় বসার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। এসি কোচের হাল যা দেখেছি, তাতে জেনারেল কম্পার্টমেন্টের সম্বন্ধে ধারণা করতে সময় লাগেনি। বাথরুম কিংবা বাকি বস্তুগুলোর কথা উল্লেখ করে কাউকে লজ্জা দিতে চাই না। কিন্তু প্রতিবার লাইন পরিবর্তনের সময় যে ভয়ঙ্কর ঝাঁকুনি লাগে, মনে হয় তখনই বুঝি উল্টে গেল গোটাটা। মাঝে মাঝে রাতে ঘুম ভেঙে যায় জং ধরা জীর্ণ লোহার অংশগুলোর ঘর্ষনের শব্দে। মনে হয় এক বৃদ্ধ কাতর কন্ঠে বলছে, “আমায় ছেড়ে দে, আর পারছি না..”
সবশেষে তিনি সমবেদনা জানিয়ে লেখেন, ‘সমবেদনা একটা শব্দ কেবল। যার প্রিয়জন হারায়, সেই ব্যথা সে ছাড়া কেউ বোঝে না হয়ত। নিহতদের পরিবারকে ঈশ্বর সামলে ওঠার শক্তি দিন। আহতরা দ্রুত সেরে উঠুন.. এটুকুই প্রার্থনা!” দেবাংশুর এই পোস্টে এটুকু বোঝা গিয়েছে যে, তৃণমূল এই ট্রেন দুর্ঘটনাকে হাতিয়ার করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে চলেছে। এখন দেখার বিষয় এটাই যে, বিজেপি এই নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেয়।