সংসার চালাতে রাস্তায় পিঠে বিক্রি করছে উচ্চশিক্ষিত তরুণী, বাংলার মেয়ের লড়াইয়ের ভাইরাল ভিডিও

বাংলা হান্ট ডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে মাঝে মাঝে এমন কিছু ভিডিও ভাইরাল হয় যা ফুটিয়ে তোলে সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি। পাশাপাশি, জীবনযুদ্ধের লড়াই যে সকলের কাছে সমান নয়, তাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় সেই সব ভিডিওগুলি।

সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। যা দেখে রীতিমতো আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন সকলে। জীবনের প্রতিটি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সংসারের হাল ধরতে যেভাবে একজন যুবতী লড়াই চালাচ্ছেন তা দেখে সকলেই কুর্ণিশ জানিয়েছেন তাঁকে।

   

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে, স্নাতক পাশ করেও সংসারের হাল ধরতে রাস্তার ধারে ভাপা পিঠে বিক্রি করছেন এক যুবতী। এই কাজ তাঁর দাদুর কাছ থেকে শিখেছেন বলেও জানান তিনি।

পাশাপাশি, আরও জানা গিয়েছে যে, ওই যুবতীটির বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের সরাইহাটের চক সাতুল্লায়। ২০২০ সালে বুনিয়াদপুর কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন তিনি। বাবা-মা সহ দুই বোন এবং এক ভাইয়ের সংসারে তিনিই একমাত্র উপার্জন করেন বলেও জানা গিয়েছে।

রাস্তার ধারে ভাপা পিঠে বানানোর পাশাপাশি, স্থানীয় নার্সিং ট্রেনিংয়ের ইনচার্জের দায়িত্বও সামলাচ্ছেন ওই যুবতী। বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে শুরু করে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পিঠে বিক্রি করেন তিনি। এই বিক্রির মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা করে আয় হয় তাঁর।

বাবা অসুস্থ এবং ভাইর উচ্চমাধ্যমিক থাকায় এখন একা হাতে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। তবে, এই কাজে তাঁর দিদিও তাঁকে সাহায্য করেন বলেও জানিয়েছেন ওই যুবতী। তবে, পিঠে বিক্রির পাশাপাশি, টিউশনও পড়াতে হয় তাঁকে। এমনকি, শীত পেরিয়ে গেলে তিনি শুরু করেন জাল বানানোর কাজ।

এদিকে, এই কাজ তাঁর কেমন লাগে এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন যে, বাধ্য হয়েই তাঁকে এই কাজ করতে হয়। অসুস্থ বাবা এবং ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ সামলানোর পাশাপাশি পুরো পরিবারের মুখে খাওয়ার তুলে দিতেই এই কাজকে বেছে নিয়েছেন ওই যুবতী।

এদিকে, ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি দেখে আবেগে ভেসেছেন নেটিজেনরা। পাশাপাশি, এটিকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। প্রত্যেকেই কমেন্টের মাধ্যমে তাঁর এই কাজের জন্য তাঁকে বাহবা জানিয়েছেন। এত কম বয়সে যেভাবে ওই যুবতী সংসারের দায়িত্ব একা হাতে সামলাচ্ছেন তা দেখে স্যালুট জানিয়েছেন সকলেই। এই প্রসঙ্গে একজন নেটিজেন কমেন্ট করে জানান “এরাই লক্ষ্মী। শীঘ্রই এর ভান্ডার ভরে উঠবে!”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর