সাত প্রজন্মের পর পরিবারে জন্ম কন্যা সন্তানের! খুশিতে বড় উপহার দিলেন চিকিৎসক বাবা-মা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: পাল্টাচ্ছে সময় এবং সমাজ। সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে মানসিকতারও। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আগেকার দিনে মহিলাদের স্থান কার্যত ঘরের ভেতরেই ছিল। এছাড়াও, কন্যা সন্তান জন্মানো মানেই তাকে একপ্রকার “বোঝা” হিসেবেই মনে করতেন গোঁড়া মানুষেরা। কিন্তু, পরবর্তীকালে মহিলারাও প্রমাণ করেছেন তাঁরা কোনো অংশেই কম নন।

পাশাপাশি, চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটিয়ে আজ সমাজের প্রতিটি উঁচু জায়গাতেই মহিলাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যা সমাজ এবং সভ্যতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইতিবাচক দিক। সাধারণত কন্যা সন্তানকে ঘরের “লক্ষ্মী” হিসেবে কল্পনা করা হয়। পাশাপাশি, কন্যা সন্তান জন্মালে এখন অনেকেই রীতিমতো উৎসবের আয়োজন করে ফেলেন।

তবে, মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই দম্পতি যা করেছেন তা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছেন সকলেই। বিহারের মধুবনী জেলার এক চিকিৎসক দম্পতি তাঁদের কন্যার জন্মকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং কন্যাদের প্রতি সমাজে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠাতে এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। যেই কারণে মেয়ের দশম জন্মদিনে এক অভিনব উপহার দিয়েছেন তাঁরা।

মেয়ের জন্মদিনে একদম চাঁদে জমি কিনে ফেলেছেন ওই দম্পতি। জানা গিয়েছে যে, বিহারের মধুবনীর ঝাঁঝাড়পুরের আরএস বাজার এলাকায় বসবাসরত ডাঃ সুরবিন্দু ঝা এবং ডাঃ সুধা ঝা তাঁদের মেয়ে আস্থা ভরদ্বাজের নামে চাঁদে এক একর জমি রেজিস্ট্রি করেছেন। ডাঃ সুরবিন্দু ঝা, ঝাঁঝাড়পুরে একটি বেসরকারি নার্সিং হোম চালান।

এই প্রসঙ্গে সুরবিন্দু জানিয়েছেন যে, “আস্থা আমাদের পরিবারের প্রথম মেয়ে। কন্যারা যে কোনো পরিবারের মান এবং সম্মান সমান ভাবে বহন করে। প্রায় সাত প্রজন্ম ধরে কোনো কন্যার হাসির আওয়াজ পরিবারে অনুরণিত হয়নি, তাই আমাদের বাড়িতে আস্থা আসায় পরিবারের সবাই স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি। যেই কারণে এই আনন্দকে বিশেষ করে তুলতে আমরা চাঁদে জমি কিনে আমাদের মেয়েকে উপহার দিয়েছি।”

পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন যে, মেয়ের জন্য চাঁদে জমি কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় দেড় বছর সময় লেগেছে। প্রথমে তিনি আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকা লুনা সোসাইটির ওয়েবসাইটে আবেদন করেন। তারপর সমস্ত কাগজপত্র সম্পন্ন করার পরে এবং পেপ্যাল ​​অ্যাপের মাধ্যমে জমির মূল্য এবং রেজিস্ট্রেশন ফি জমা দেওয়ার পরে, চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি, স্পিড পোস্টের মাধ্যমে তিনি চাঁদে জমি রেজিস্ট্রির একটি কাগজ পান।

WhatsApp Image 2022 03 05 at 7.12.13 PM

এদিকে, ওই চিকিৎসক দম্পতি আরও জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে তাঁরা সমাজকে জানাতে চান, কন্যা সন্তানরাও পরিবারের জন্য অনেক সৌভাগ্য বয়ে আনে। পাশাপাশি, তাদের খুশি রাখলে পরিবারেও তার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ে বলেও মনে করেছেন তাঁরা।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর