বাংলাহান্ট ডেস্ক: পুরনো দিনের বাংলা সিনেমায় খলনায়িকা মানেই অভিনেত্রী অনামিকা সাহার (Anamika Saha) স্থান ছিল বাঁধাধরা। তাঁর একটা চাহনিই যথেষ্ট ছিল ভয় ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। সেই দাপুটে খলনায়িকাই পরে হয়ে ওঠেন স্নেহময়ী মা। সেখানেও তিনি সমান সাবলীল। যাত্রার মঞ্চ থেকে বড়পর্দা কিংবা ছোটপর্দা, সব জায়গাতেই চুটিয়ে কাজ করেছেন অনামিকা সাহা।
কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেল তিনি লাইমলাইট থেকে দূরে। বছর খানেক আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছিলেন তিনি। এখন অবশ্য তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু খোঁজ রাখেন না কেউই। এমনকি অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্যকে (Aparajita Adhya) নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ মাধ্যমকে অনামিকা জানান, অপরাজিতা আঢ্যকে তিনিই বড়পর্দায় সুযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন। এর জন্য নাকি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বকাও খেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অপরাজিতা হয়ে উঠেছিল তাঁর মেয়ের মতো। ‘মামমাম’ বলে ডাকতেন তিনি অনামিকাকে। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর আফশোস, এখন আর খোঁজও করেন না অপরাজিতা। এমনকি আজ এত সাফল্য পেয়েও একবারও অনামিকা সাহার নাম করেননি তিনি।
শুধু অপরাজিতা আঢ্য না, তাঁর অভিমান ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) প্রতিও। তাঁর সঙ্গেও বহু ছবিতে কাজ করেছেন অনামিকা। ‘মায়ের আঁচল’ ছবিতে অনামিকা প্রসেনজিতের মা ছেলে রসায়ন এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে বিজলী সিনেমা হলের বাইরে টানা ১০০ দিন পর্যন্ত একটি কাটআউট রাখা হয়েছিল অভিনেত্রীর।
সেই প্রসেনজিৎও এখন আর ফিরে তাকান না। তবুও নিজের কর্তব্যটুকু করেন অনামিকা। অভিনেতার জন্মদিনে বা অন্য কোনো ভাল খবর পেলে মনে করে শুভ কামনা ঠিকই জানান।
১৯৭৩ সালে আশার আলো ছবির হাত ধরে অভিনয় জগতে পা রাখেন তিনি। উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন অনামিকা সাহা। বাঘ বন্দি খেলা, দুই পুরুষ ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তম কুমারের সঙ্গে। একটি গানের দৃশ্যে সৌমিত্রর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তিনি। বিষে বিষে বিষক্ষয়, প্রতিশোধ অনামিকা সাহার অন্যতম জনপ্রিয় ছবি।
এখনো পর্যন্ত ৪০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন অনামিকা সাহা। তিনি জানান, এখন যেভাবে কাজ হয় সেটা পছন্দ নয় তাঁর। তবুও অভিনয়ের নেশাটা তো রয়ে গিয়েছে। তাই ভাল চরিত্রের আশায় রয়েছেন অনামিকা সাহা।