বাংলাহান্ট ডেস্ক : এখনও পাহাড় ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে সরাসরিই মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করতে শোনা গেল বিমল গুরুংকে। বুধবার গুরুং দলের নারী সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানে বিমল গুরুং বলেন, ‘এখনই জিটিএ নির্বাচন চাই না। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অথরিটির আগে আরও ক্ষমতা চাই। তারপর হোক ভোট। তা না করে অবিলম্বে নির্বাচন হলে আমৃত্যু অনশন করব আমি।’
বছর দুয়েক আগে কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে বিমল গুরুং ঘোষণা করেন, পাহাড়ে তাঁর দল তৃণমূলের সঙ্গেই কাজ করবে। এরপর রাজ্যের দেওয়া নিরাপত্তা পরিবেষ্টিত হয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনের পর ফেরেন পাহাড়ে। সঙ্গে ছিলেন রোশন গিরিও।
মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে যোগ দেননি বিমল। কিন্তু উপস্থিত ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা রোশন গিরি। সেখানেও তাঁকে কার্যতই গুরুং এর সুরেই গাইতে দেখা যায়। সেদিন বৈঠকে তিনি বলেন, জিটিএর হাতে আরও বেশি ক্ষমতা দেওয়া হোক আগে। তারপর করা হোক ভোট। হামরো পার্টি সহ একাধিক পার্টি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর যতদ্রুত সম্ভব ভোট সাড়ার প্রস্তাবেই সায় দিয়েছিল।
কিন্তু এখন পাহাড়ের ভোট কেন রুখতে চাইছেন গুরুং? রাজনৈতিক মহলের দাবি, জিটিএ কে ঢাল করেই তার পিছনে নিজের জমি শক্ত করতে চাইছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। পাহাড়ে এখনও পায়ের নীচে মাটি নেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। এবার দার্জিলিং এর পুরসভাও দখল করেছে নতুন দল হামরো পার্টি। এখনই ভোট হলে হামরো পার্টির জয়ের সম্ভাবনা বিপুল। তাই এরই ফাঁকে জিটিএ নিয়ে আন্দোলন করে সময় নষ্ট করতে চাইছেন বিমল গুরুং, যাতে সেই সুযোগে খুঁটি শক্ত করতে পারে দল।
গুরুং চাইছেন সংবিধানের ২৪৪ নম্বর ধারা মেনে জিটিএ কে আংশিক স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য দেওয়া হোক। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার জন্য দরকার সংবিধান সংশোধন করার। যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আর সেই সময়কেই ব্যবহার করতে চাইছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এই দাবি যে অত্যন্ত সুচারু পরিকল্পনা করেই নেওয়া হয়েছে নির্বাচনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিতে এমনটাই মত পর্যবেক্ষক মহলের।
যদিও এই মুহুর্তে তড়িঘড়ি পাহাড়ের ভোট সেরে নিতে চান মমতা৷ সামনেই আসছে পর্যটন শিল্পের মরশুম। গরমের ছুটিতে অর্ধেক বাঙালিরই ‘ডেস্টিনেশন দার্জিলিং’। তাই সেই সময় পাহাড়ে কোনওরকম অশান্তি হোক তা কোনও মতেই চাইবে না রাজ্য। ফলে গুরুং রর দাবি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা রাজ্য সরকারকে বেশ ভালোরকম চাপেই ফেলল তা বলাই বাহুল্য।