শুধু বেনিয়ম করে নিয়োগই না, মন্ত্রী বাবার প্রভাব খাটিয়ে বাড়ির পাশের স্কুলেই চাকরি নেন অঙ্কিতা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল সিবিআই-র তদন্তে। শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রি পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর শুধু বেআইনি চাকরিই নিয়েছেন তা নয়, বেনিয়ম করে বাড়ির কাছের বিদ্যালয়ে নিয়োগও নিয়েছেন তিনি। গোগন সূত্রে খবর, সিবিআই জানতে পেরেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে বিদ্যালয়গুলির তালিকা দিয়েছিল তাতে যোগ দেননি অঙ্কিতা। আইনের বুড়ো-আঙুল দেখিয়ে তিনি বেছে নেন বাড়ির সামনের একটি বিদ্যালয়কে। সেখানেও মন্ত্রী-বাবা পরেশ অধিকারীর প্রভাব রয়েছে বলেই অনুমান করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বেনিয়ম করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মন্ত্রিকন্যা অঙ্কিতার বিরুদ্ধে। এই বিষয়ে মামলা করেব ববিতা সরকার নামে এক চাকরিপ্রার্থী। অভিযোগ ববিতা সরকারের থেকে কম নম্বর পেয়েও তিনি চাকরি পেয়ে যান। জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালের নভেম্বরে দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই তালিকায় বাবার প্রভাব খাটিয়েই প্রথম স্থান ‘অর্জন’ করেন অঙ্কিতা। নিয়ম অনুসারে, সেই তালিকা মেনে উত্তীর্ণদের কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয়। সূত্রের খবর, দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ে ডাক পান অঙ্কিতা। সেখানে তাঁকে দেওয়া হয় ১৩টি স্কুলের তালিকা। অঙ্কিতা বেছে নেন বেলপাহাড়ি গার্লস হাই স্কুলের নাম। কিন্তু তা থেকে যায় খাতায় কলমেই। আশ্চর্যজনক ভাবে তিনি যোগ দেন বাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত ইন্দিরা গার্লস উচ্চবিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয়ে অঙ্কিতা এক সময় পড়াশোনাও করতেন।

সূত্রের খবর, অঙ্কিতার জন্য নির্দিষ্ট ছিল বর্ধমান, পুরুলিয়া, পশ্চিম এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দু’টি করে এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার চারটি ও বাঁকুড়ার একটি স্কুলের নাম। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশনের তালিকা না মেনে বেআইনি ভাবে ইচ্ছামতো বিদ্যালয়ে চাকরি নিয়েছেন অঙ্কিতা অধিকারী। মামলাকারীদের এক আইনজীবী জানান, এই বিষয়ে মন্ত্রী বাবা প্রভাব না খাটালে সম্ভব হত না। এসএসসি ঠিক করে বিষয় অনুযায়ী কোন বিদ্যালয়ে কতগুলি শূন্যপদ আছে। এ ক্ষেত্রে অঙ্কিতা এসএসসি-র কোনও নিয়মই মানেননি। এমনকি ইন্দিরা গার্লস উচ্চবিদ্যালয়ে আদৌও কোনো শূন্যপদ ছিল কি না তা-ও পরিষ্কার নয়। যদি শূণ্য না থাকে তাহলে কি তাঁকে জোর করে সেখানে ঢোকানো হয়েছে। উঠছে সেই প্রশ্নও।

ankita 1

বৃহস্পতিবার মামলাকারী ববিতা সরকার সিবিআই দফতরে যান। সেখানে তদন্তকারীদের তিনি একাধিক তথ্যও দিয়ে আসেন। তাঁর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘আমরা সিবিআইকে সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় সাহায্য করেছি। আমরা আশা করি তারা দ্রুত সঙ্গে তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে। বঞ্চিতরা যাতে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার পান সেটাই চাই।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর