বাংলাহান্ট ডেস্ক : একের পর এক দুর্নীতি নিয়ে বিতর্কের তীরে বিদ্ধ তৃণমূল সরকার। এবার দুর্নীতিতে নাম জড়াল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রিনা দাসের। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করার নামে তোলাবাজি করার অভিযোগ সামনে এসেছে। এই অভিযোগে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে কাঁথি হাসপাতালের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরাই।
খবর পেয়েই মোতায়েন হয় কাঁথি থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। অবরোধকারীদের কোনও ভাবে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচী বন্ধ করে পুলিশ। তৃণমূল কাউন্সিলরের কার্যকলাপে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। এই বিষয় নিয়ে তোপ দেগেছে বিজেপিও।
সূত্রের খবর, কাঁথি পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিনা দাস। সর্বশেষ পুরভোটে কাঁথি পুরসভার উত্তর কাঁথির বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিনহাকে হারান তিনি। মাত্র তিন মাস আগে গঠন হয় পুরবোর্ড। বুধবার সন্ধ্যায় কাঁথির পুরসভা এলাকায় কাঁথি হাসপাতাল রোডের সামনে প্রায় শতাধিক কর্মী সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করে বসে পড়েন।
শুধু তাই নয়, রিনা দাসের পদত্যাগের দাবিও জানান তাঁরা। তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সোচ্চার হন দলীয় সমর্থকরাই। রাস্তায় বসে তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘কাউন্সিলারের দাদাগিরি মানছি না মানবো না, রিনা দাসের কালো হাত ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও।’ রাস্তা অবরোধের ফলে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজটের। হাসপাতালে যাওয়া একাধিক অ্যাম্বুলেন্স ও পথচারীরা ব্যাপক সমস্যায় পড়েন। এরপর কাঁথি থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেন। স্বাভাবিক হয় যান চলাচলও।
বিক্ষোভকারী শেখ সেলিম বলেন, ‘কাউন্সিলর রিনা দাস আমাদের কোনোও রকম সহযোগিতা করছেন না। বাড়ি দেওয়ার নাম করে এলাকার বাসিন্দাদের থেকে অনৈতিক ভাবে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। তিনি ভোটে জেতার পর এক দিনের ওয়ার্ডে যাননি। উল্টে হুমকি দেন যারা মিটিং-এ যায়নি তাদেরকে কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে না।’
এগরা বিধায়ক তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তরুণ কুমার মাইতি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমান হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কাঁথি পুরসভা ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিনা দাস অবশ্য দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ মিথ্যে। আমাকে কলঙ্কিত করার জন্যই এসব চক্রান্ত করা হয়েছে।’
এই ঘটনায় তোপ দেগেছে বিজেপিও। কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এরা তো জনগণের ভোটে যেতেনি। জনগণের কাছে কোনও দায়বদ্ধতাই নেই এদের। তাই নিজেদের আখের গোছাতে নেমে পড়েছে। সবাই কাটমানিখোড়। কাঁথিও তার ব্যতিক্রম নয়। কাঁথির মানুষ এবার বুঝুক এরা কী জিনিস।’ প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের একটি বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় সঙ্গীত ভুল পরিবেশন করে খবরের শিরোনামে উঠে এসে ছিলেন এই রিনা দাসই।