ভৌতিক কাণ্ড! উঠোনে থাকা নিমগাছ কাটতেই উৎপাত অশরীরীর! ঘরে ভাঙচুর চালাচ্ছে ব্রহ্মদৈত্য

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কথাই আছে ইট মারলে পাটকেল খেতেই হয়।এবার সেই কথাই বাস্তবে ঘটেছে। শুরু হয়েছিল উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। নিজের থাকার জায়গা নিম গাছটি কেটে দিতেই তার পাল্টা প্রতিশোধ নিলো এক অশরীরী। কথাটা শুনতে অবাস্তব শুনতে লাগলেও এটাই ঘটেছে কাটোয়ার আখড়া গ্রামের আচার্য পরিবারে। এই ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঝার দ্বারস্থ হয়েছে তারা। কিন্তু এই ভূতের গল্পে বিশ্বাস করতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চ। ইতিমধ্যে বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।

পৌরহিত্যর পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজও করেন কাটোয়ার আখড়া গ্রামের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা রঞ্জিত আচার্য। নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসার। তার বাড়িতে তিনি ছাড়া রয়েছেন বিধবা মা, স্ত্রী ও এক ছেলে নয়ন। কিন্তু তাঁদের বাড়ির মধ্যেই থাকা একটি নিমগাছকে ঘিরেই হলো বিপত্তি। সেই নিমগাছ কাটার প্রক্রিয়া শুরু হতেই ঘটতে শুরু করলো নানান রকম ভৌতিক ঘটনা। রঞ্জিতবাবুর বাড়ির নিমগাছটি প্রায় ১৮ বছরের পুরনো এতদিন পর্যন্ত তিনি নিমগাছ হাত দেয়নি। কিন্তু এতদিন পর তিনি গাছটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতেই শুরু হয়েছে বাড়িতে অশরীরী উপদ্রব। কেউ একজন ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করছেন কিন্তু তাকে দেখা যাচ্ছে না।

রঞ্জিতবাবু জানিয়েছেন, ”নিমগাছটি প্রত্যেক বছরই একটু আধটু ডালপালা ছেঁটে দিতাম। কিন্তু তখন কোনও সমস্যা হয়নি। এরপর গাছের পাতা পড়ে বাড়িঘর অপরিষ্কার হচ্ছিল। তাই গাছটি সম্পূর্ণ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। দিন দশেক আগে গাছের ডালপালা কেটে দেওয়ার পর যখন কাণ্ডের একাংশ কাটা হয়, সেদিন রাত থেকেই ওই অশরীরী ঘরের মধ্যে জিনিসপত্র ভাঙচুর করছে। চোখের সামনেই জলের বালতি, চালের টিন উলটে দিচ্ছে। বাসনপত্র ফেলে দিচ্ছে।”

একা রঞ্জিতবাবু নন, একই কথা বলছেন তাঁদের প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশী দিব্যেন্দু ঘোষের কথায়, “আমি রঞ্জিতদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তখন কেও যেনো আমার চোখের সামনেই জলের বালতিটা কে যেন লাথি মেরে ছিটকে ফেলে দিল। তবে তাকে চোখে দেখতে পাইনি। আমি সঙ্গে সঙ্গে ভয়ে পালিয়ে এসেছি। তারপর থেকে ওদের বাড়িতে যাইনি।”

অশরীরীর উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে দাঁইহাটের ঠাকুরবাড়ির দ্বারস্থ হন আচার্য পরিবার। সেখান থেকে বলা হয়েছে, ”ওই নিমগাছে এক ব্রহ্মদৈত্য থাকতো। তাই গাছটি কাটায় তিনি রেগে গিয়ে এসব ঘটাচ্ছেন।” নিমগাছটি কাটার কাজ বন্ধ রেখেছেন বাড়ির মালিক। পাশাপাশি নিয়ম করে গাছের তলায় দু’বেলা ধুপধুনো দিয়ে ব্রহ্মদৈত্যের’কাছে ক্ষমা চাইছেন রঞ্জিতবাবুরা।

IMG 20220612 WA0002

যদিও অলৌকিকতার বিষয়টি অস্বীকার করছে বিজ্ঞানমঞ্চ। এ প্রসঙ্গে কাটোয়ায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সম্পাদক জয়ন্ত সরকার জানিয়েছেন, ”এইসব ঘটনার মধ্যে কোনও অলৌকিকতা নেই। এগুলি খুবই সাধারণ ঘটনা। হয় জিনিসপত্র ফেলে দেওয়ার বিষয়টি কেউ ঘটাচ্ছে। আর না হলে দু একবার কোনওভাবে পড়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে ওই পরিবারের মধ্যে একটা মনস্তাত্বিক সমস্যা কাজ করছে। আমরা খোঁজ নেব।”

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর