একটা সময়ে ছিলেন ইংরেজির লেকচারার! এখন ৭৪ বছরের এই বৃদ্ধ উপার্জনের জন্য চালান অটোরিকশা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইংরেজিতে একটি বহুলপ্রচলিত প্রবাদ রয়েছে। যেটি হল, “Never judge a book by its cover”। অর্থাৎ, মলাট দেখেই কোনো বইকে বিচার করা যায়না। ঠিক এই প্রবাদটি মানুষের জীবনের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভাবে খাটে। কারণ, মানুষেরও বাহ্যিক অবয়ব দেখে বোঝা যায়না যে, নির্দিষ্ট ব্যক্তিটি ঠিক কতটা গুণের অধিকারী। মূলত, বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা এমন একজনের প্রসঙ্গ আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করব যিনি সম্প্রতি নেটমাধ্যমে (Social Media) শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তাঁর অভিনবত্বে।

বর্তমানে পেশা হিসেবে তিনি একজন অটোরিকশা চালক হলেও একটা সময়ে তিনি ছিলেন ইংরেজির লেকচারার। শুধু তাই নয়, ৭৪ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধ ভাগ্যের পরিহাসকে মেনে নিয়ে গত ১৪ বছর ধরে অটোরিকশা চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, একদিন বেঙ্গালুরুর নিকিতা আইয়ার নামে এক যাত্রী তাঁর অটোতে বসে রীতিমতো অবাক হয়ে যান। মূলত, নিকিতার অফিস যেতে দেরি হয়ে যাওয়ায় ওই বৃদ্ধ অটোচালক তাঁকে স্পষ্ট ইংরেজিতে বিনম্রভাবে জানান যে, “Please Come in Maa’m, you can pay what you want”। এদিকে, একজন অটোচালকের মুখ থেকে এমন পরিষ্কার ইংরেজি শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান নিকিতা। আর তারপরেই তিনি বিস্তারিত জানতে শুরু করেন তাঁর সম্পর্কে।

পাশাপাশি, নিকিতা এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট Linkedin-এ শেয়ার করেন। যা তুমুলগতিতে ভাইরাল হতে শুরু করে। উল্লেখ্য যে, ওই অটোচালকের নাম হল পাতাবি রমন (Pataabi Raman)। নিকিতার সাথে আলাপকালে ওই বৃদ্ধ জানান, একটা সময় তিনি মুম্বাইতে ইংরেজির লেকচারার ছিলেন। তিনি এম.এ এবং এম.এড করেছেন। এদিকে, অবসর নেওয়ার পরে তিনি কর্ণাটকে আর চাকরি পাননি। তাই তিনি এই পেশাকে বেছে নেন।

পাশাপাশি, ওই বৃদ্ধ আরও বলেন ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার আগে তিনি পাওয়াইয়ের একটি কলেজে ২০ বছর ধরে পড়িয়েছেন। এছাড়াও, পাতাবি হেসে জানান, “শিক্ষকদের বেতন ভালো হয় না। আপনি সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারেন। এদিকে, আমি যেহেতু একটি প্রাইভেট ইনস্টিটিউটে পড়াতাম তাই আমার পেনশন ছিলনা। কিন্তু, এখন এই কাজ করে আমি দিনে অন্তত ৭০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পাই। এটা আমার এবং আমার ‘গার্লফ্রেন্ড'(স্ত্রী)-এর জন্য যথেষ্ট।”

auto driver english lecturer 6242ce97342cc

তিনি তাঁর স্ত্রীকে মজার ছলে “গার্লফ্রেন্ড” বলেন। জানা গিয়েছে রমন কাদুগোডিতে একটি 1 BHK-এর ফ্ল্যাটে থাকেন। তাঁদের ছেলে সেই ফ্ল্যাটের ভাড়া বাবদ ১২,০০০ টাকা দিতে সাহায্য করেন। কিন্তু তারপরেও তাঁরা আর তাঁদের সন্তানদের উপর নির্ভরশীল নয়। বরং, তিনি দৃপ্তকণ্ঠে জানান, “এখন আমি আমার রাস্তার রাজা। আমি যখন খুশি আমার অটো নিতে পারি এবং যখন খুশি কাজ করতে পারি।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর