‘নির্বাচনী প্রচারে দান খয়রাতি দেশের প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যা’ মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : কেউ দেয় ‘জুমলা’, তো কেউ দেয় ‘জিতলেই মাসে ৫০০০ করে টাকা’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনী প্রচারে এই সব ছেলে ভোলানো প্রতিশ্রুতি বর্তমান সময়ে ‘গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যা’ বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এই ধরনের প্রতিশ্রুতিগুলি পরীক্ষা করে দেখা উচিত বলে মনে করে ভারতের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট আজ এই বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করার দাবি জানিয়েছে।

সপ্তাহ খানেক আগেই ভারতের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ এই ধরনের প্রতিশ্রুতিকে নিয়ন্ত্রণ করার রাস্তা খোঁজার কথা বলেছিল। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরালি এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ আজ মন্তব্য করেছে, নীতি আয়োগ, অর্থ কমিশন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, শাসক ও বিরোধী দল এবং এই বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত পক্ষগুলিকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা দরকার। এই কমিটির কাজ হবে অপ্রয়োজনীয় দান-খয়রাতি প্রকল্প ও ভোটারদের মন ভোলানো প্রতিশ্রুতি দেওয়া বন্ধ করা।

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, ‘যাঁরা খয়রাতি প্রকল্প চান এবং ওই ধরনের প্রকল্পের বিরোধিতা করেন, সেই সঙ্গে নীতি আয়োগ, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ও এর সঙ্গে এই বিষয়ে যুক্ত সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করা দরকার। যা থেকে একটি গঠনমূলক সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব।’ কমিটি গঠনের ব্যাপারে মতামত জানাতে কেন্দ্র, নির্বাচন কমিশন, অভিজ্ঞ আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং মামলার আবেদনকারীকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায় শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়ে বলেন, মন ভোলানো প্রতিশ্রুতি এবং খয়রাতি প্রকল্পগুলি ভোটাদাতাদের ‘ঘুষ’ দেওয়া ছাড়া কিছুই নয়। এই জাতীয় প্রতিশ্রুতি অবাধ নির্বাচনের পরিবেশকেই নষ্ট করছে। আজ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আদালতে উপস্থিত ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আবেদনকারীর বক্তব্য সমর্থন করে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি ভোটদাতাদের মারাত্মক প্রভাবিত করে। দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যায়।’

এরপরই প্রধান বিচারপতি রমণা বলেন, ‘দেশের নাগরিকরা মনে করেছেন, তাঁরা কর দিচ্ছেন। কেউ ভাবছেন না যে তাঁরা উন্নয়নের জন্য টাকা দিচ্ছেন। প্রতিশ্রুতির ফায়দা সব দলই নিয়েছে। কারও নাম উল্লেখ করতে চাই না।’

খয়রাতি প্রকল্প বন্ধ নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় নোটিস দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদি। তা নিয়ে আজ ট্যুইট করেন পিলিভিটের সাংসদ বরুণ গান্ধী। তিনি লেখেন, ‘জনগণকে স্বস্তি দিতেই ওই ধরনের প্রকল্পগুলি চালু হয়। আমজনতার দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের দিকে তাকানো উচিত। সংসদ সদস্যেরা পেনশন-সহ যে সব সুযোগসুবিধা ভোগ করেন, আমরা সেগুলির দিকে তাকাবো না কেন’?

কিছু দিন আগেই জনমোহিনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট টানার চেষ্টার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই ধরনের প্রতিশ্রুতিকে ‘মিষ্টান্ন সংস্কৃতি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ওই প্রবণতা দেশের উন্নয়নের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর