বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসে চলেছে। অপরদিকে, বিজেপির সংগঠনও ক্রমশ তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বাংলায় কি ঘুরে দেখাতে পারবে কংগ্রেস (Congress)? বর্তমানে এই জল্পনাই ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে।
উল্লেখ্য, অতীতে কংগ্রেসের ‘গড়’ মুর্শিদাবাদকে দিয়েই বাংলায় নিজেদের ঘাঁটি মজবুত করতে তৎপর হয়ে উঠল দেশের প্রধান বিরোধী দল। তাদের দাবি অনুযায়ী, সম্প্রতি গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে প্রায় দেড় হাজার কর্মী সমর্থক তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি মামলা সামনে এসে চলেছে। ইতিমধ্যে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে অন্যান্য দলে যোগদান করেছেন একাধিক কর্মী সমর্থকরা। অপরদিকে, রাজ্যে বিজেপি দলের অন্দরেও দ্বন্দ্ব ক্রমশই যেন বেড়ে চলেছে। একইসঙ্গে সংগঠনও তথৈবচ। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি একাধিক স্থানে উপনির্বাচনে বিজেপিকে সড়িয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। সম্প্রতি, লালগোলা কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোট ক্ষমতায় আসে। এর মাঝে আবার দেড় হাজার কর্মী সমর্থকের কংগ্রেসের যোগদান বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলায় কংগ্রেসের পুনরুত্থান অতটাও সহজ হবে না। এক্ষেত্রে অতীতে বাম জমানা কিংবা পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস শাসনের প্রথম দিকেও মুর্শিদাবাদকে কংগ্রেস তথা অধীর চৌধুরীর ‘গড়’ হিসেবেই মনে করা হতো। ২০১৬ সাল পর্যন্ত সেখানে কংগ্রেস নেতার একছত্র আধিপত্য থাকলেও পরবর্তী সময় ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে সংগঠন এবং গত বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলায় ২২ টি আসনের মধ্যে ২০ টি নিজেদের দখলে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং বাকি দুটিতে জয়লাভ করে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদ সহ বাংলায় নিজেদের ঘাঁটি মজবুত করা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বলে মনে করা হচ্ছে।
এর মাঝেই এদিন কংগ্রেস নেতা জয়ন্ত দাস বলেন, “সম্প্রতি ভগবানগোলা এবং অন্যান্য একাধিক এলাকা জুড়ে মোট দেড় হাজার কর্মী সমর্থক কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।” একইসঙ্গে, বিগত কয়েক মাসে মুর্শিদাবাদে মোট ১৭ টি চিন্তন শিবিরের আয়োজন করেছিলেন অধীর চৌধুরী। সেখানে আরো বেশ কয়েকশো মানুষ তৃণমূল এবং বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যুক্ত হয়েছেন বলে দাবি তাদের।
উল্লেখ্য, সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে মরিয়া কংগ্রেস। তাই আপাতত তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং বিজেপির দুর্বল সংগঠনকে কাজে লাগাতে মরিয়া দেশের প্রধান বিরোধী দল এবং এক্ষেত্রে অধীর ম্যাজিক-ই যে তাদের প্রধান ভরসা হতে চলেছে, সেই প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।