বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে বঙ্গ বিজেপির (Bharatiya Janata Party) প্রধান তিন মুখ যথাক্রমে শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার। তাদের নেতৃত্বে বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে একের পর এক আন্দোলনে নেমে চলেছে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। তবে বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে দলকে মজবুত করতে নয়া উদ্যোগ নেওয়ার পথে বিজেপি নেতৃত্ব। পুজোর পরে দলীয় সংগঠনের বড়সড় রদবদল আসতে পারে বলে খবর সামনে আসতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ ভোটে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত ৭৭-এ থামে বিজেপি। পরবর্তীতে একের পর এক নেতা মন্ত্রীরা দল ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন, আবার একইসঙ্গে দলের ভিতর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে যখন একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস, সেই মুহূর্তে তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতেও ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুভেন্দু, দিলীপ এবং সুকান্তদের ওপর দল নির্ভর করে থাকলেও তাদের অন্দরে গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যাওয়ায় দলীয় সংগঠন মজবুত করা তো দূরের কথা, কোন কোন প্রান্ত থেকে কোন্দলের ছবিও সামনে এসেছে। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে এ সকল ব্যর্থতা মুছে ফেলে দলীয় সংগঠনকে ফের একবার চাঙ্গা করতে মরিয়া পদ্মফুল শিবির।
সূত্রের খবর, পুজোর পরে বুথ থেকে মন্ডল, জেলা এবং রাজ্য কমিটিতে বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি, বাংলায় বিজেপির সংগঠন মজবুত করতে সুনীল বনসলকে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি স্থানে পরিবর্তন করা হয়। সূত্রের খবর, গত দুদিন ধরে চলা বৈঠকে দলের উন্নতির জন্য একের পর এক আলোচনা পর্ব সেরে চলেছেন তারা। সেই বৈঠক চলাকালীন বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশ, “একে অপরের দোষ কিংবা ত্রুটি খোঁজা বন্ধ করে সমস্যার সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। ঠান্ডা ঘরে বসে থাকার দিন নেই। যত বেশি সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে হবে। যাতে তাদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলা যায়। মানুষের সাথে আরও বেশি করে মিশতে হবে।”
সূত্রের খবর, পুজোর পর থেকেই বুথ, মন্ডল এবং জেলা ও রাজ্য কমিটিতে বড়সড় বদল আনা হতে চলেছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় নেতাদের প্রভাব এবং ভাবমূর্তি ঠিক কতখানি, তা জানতে সারপ্রাইজ ভিজিটেও যাবেন নেতৃত্ব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত কিছু সময় ধরে অন্দরে পুরনো বনাম নতুন দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুনদের অধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই বর্তমানে বাংলায় বিজেপির এই হাল বলে মনে করছেন সকলে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নতুন এবং পুরনো ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তাই দিয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।