লরিতে পিষে মৃত্যু সিভিক পুলিস, পরিবহন দফতরের আধিকারিক সহ তিন জনের! তুমুল বিক্ষোভ উলুবেড়িয়ায়

বাংলাহান্ট ডেস্ক : মর্মান্তিক ঘটনা। ওভারলোডিং-সহ গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার করছিলেন তিনি। সেই সময়ই দুটি গাড়ির মাঝে পড়ে মৃত্যু হল পরিবহন দফতরের এক আধিকারিক ও তাঁর সঙ্গে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারর-সহ তিনজনের। এই ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ায় (Uluberia) মুম্বই রোডের রানিহাটি মোড়ের কাছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকা জুড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁদের মৃত দেহ এলাকায় ফিরতেই বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী। মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে।

পুলিস সুত্রে খবর, মৃত পরিবহন দফতরের আধিকারিকের নাম উজ্জ্বল জানা (৪৭)। তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের বরসুলের আনন্দপল্লি এলাকায়। সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম অরিন্দম বিশ্বাস (৩১)। তিনি উলুবেড়িয়ার (Uluberia) মহেশপুরের কৈজুড়ির বাসিন্দা। মৃত লরিচালকের নাম আফসার আনসারি। জানা যাচ্ছে, বুধবার রাত ১টা নাগাদ মুম্বই রোডের রানিহাটি মোড়ের কাছে ডিউটি করছিলেন উজ্জ্বল জানা ও অরিন্দম বিশ্বাস। কলকাতামুখী লেনের পাশে দাঁড়িয়ে একটি লরির কাগজপত্র দেখছিলেন তাঁরা। সেই সময় দ্রুত গতিতে একটি লরি চলে আসে। লরিটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। দুটি গাড়ির মাঝে পড়ে পিষে যান উজ্জ্বল ও অরিন্দম। গুরুতর আহত হন ঘাতক লরিটির চালকও। দুর্ঘটনার পর পুলিস আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তিনজনকেই নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে জানান। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ একটি মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা যাচ্ছে।

এদিকে, পরিবহন দফতরের কর্তা উজ্জ্বল জানা ও সিভিক ভলান্টিয়ার অরিন্দম বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উলুবেড়িয়া থানার সিভিক ভলান্টিয়াররা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ নিয়ে নরেন্দ্র মোড়ে মুম্বই রোড অবরোধ করে তাঁরা। পুলিসকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। তাঁদের দাবি, রোস্টার হিসাবে তাঁদের ডিউটিতে রাখতে হবে। যেখানে যখন খুশি ডিউটিতে পাঠানো যাবে না। পাশাপাশি তার আরও দাবি করে যে, মৃত সিভিক ভলান্টিয়ার অরিন্দম বিশ্বাসের এক বোনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। অরিন্দমের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান তাঁরা। প্রায় আধঘণ্টা অবরোধ চলার পর শান্ত হয় এলাকা।

সিভিক ভলান্টিয়ারা দাবি করেন, বুধবার রাতে অরিন্দমের ডিউটি ছিল নরেন্দ্র মোড়ের পুলিশ কিয়স্কে। কিন্তু তাকে পাঠানো হয় রানিহাটিতে। অভিযোগ, ট্রাফিকের বড়বাবু জোর করে অরিন্দম বিশ্বাসকে রানিহাটিতে পাঠান। তার জেরেই এই মৃত্যু। তবে পুলিসের ওপর মহলের কর্তারা কেউই এই ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর