বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে (Durga Puja) কেন্দ্র করে জনসমাগম চোখে পড়ার মতো। উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহর থেকে শহরতলী, সর্বত্র মানুষের ভিড়। পরপর দু’বছর করোনার কারণে স্তব্ধ থাকে জনজীবন, তবে এ বছর ধুমধাম করে পালন করা হয়ে চলেছে দুর্গাপুজো। এর মাঝেই এ বছর ইউনেস্কোর (UNESCO) তরফ থেকে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে দেওয়া হয়েছে হেরিটেজ স্বীকৃতি। তবে এই বিশেষ সম্মান থেকেও বাদ গেল না রাজনীতি।
উল্লেখ্য, প্রতিটি বছর মহাআনন্দে পালন করা হয় দুর্গাপুজো। এ বছর ইউনেস্কোর তরফ থেকে হেরিটেজ সম্মান সেই আনন্দকে আরো বহু গুণে বৃদ্ধি করেছে। তবে বাঙালির এই সম্মানের নেপথ্যে যার অবদান অনস্বীকার্য, সেই ইতিহাস গবেষক তপতী গুহঠাকুরতাকে নিয়ে বহুদিন ধরেই জারি রয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
দুর্গাপুজোকে ‘হেরিটেজ’ সম্মান প্রদান প্রসঙ্গে পুজোর একমাস পূর্বেই একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে ‘হেরিটেজ’ সম্মানের কৃতিত্ব প্রধানত কেন্দ্রের এবং তা মূলত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই রাজ্য সরকার নিজেদের দখলে করার চেষ্টা করে চলেছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। একইসঙ্গে তপতীদেবীকে সঠিক সম্মান দেওয়া হচ্ছে না বলেও কটাক্ষ ছুড়ে দেয় বিরোধীরা। তবে পরবর্তীতে মমতার অনুষ্ঠানে দেখা মিলেছিল ইতিহাস গবেষকের। এমনকি, তাঁকে সম্মান প্রদান করতেও দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই সময় তৃণমূল সরকার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তবে ইতিমধ্যেই তপতী গুহঠাকুরতার একটি মন্তব্যকে ঘিরে পুনরায় একবার সৃষ্টি হল বিতর্কের। উল্লেখ্য, অতীতে দুর্গাপুজোকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে আসার জন্য একাধিকবার প্রয়াস করে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক। তবে প্রতিবার ব্যর্থ হয় তারা এবং শেষ পর্যন্ত ইতিহাসবিদ তপতী গুহ ঠাকুরতার নিকট উপস্থিত হয় কেন্দ্র মন্ত্রক। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে দীর্ঘ গবেষণার পর গবেষণা তথ্য পেশ করা হয় ইউনেস্কোর কাছে এবং সেই গবেষণার ওপর ভিত্তি করে দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেয় তারা। তবে এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সম্মান প্রদান করা হলেও কেন্দ্রের মোদী সরকারের তরফ থেকে ধন্যবাদটুকু জানানো হয়নি বলে এদিন মন্তব্য প্রকাশ করেন তপতীদেবী।
একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “দুর্গাপুজোকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছে, তাতে খুব একটা অবাক নই। প্রতিটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে সাফল্য দেখা যায়, তার পেছনে কিন্তু মেধাবী এবং গবেষণার কাজ থাকে। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফ থেকে আমায় এবং আমার টিমকে ধন্যবাদটুকু জানানো হয়নি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” যদিও ইতিমধ্যে তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূচনা হয়েছে। একদিকে কেন্দ্র সরকারের সমালোচনায় যেমন নেমেছে এক শ্রেণীর মানুষ, আবার বিজেপির তরফ থেকেও একে পাল্টা রাজনীতির কৌশল বলে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে।