জেলে জন্মদিন জানাতে আসা অনুগামীকে ফেরালেন, কেন এমন করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে, ‘দিন কখনও সমান নাহি যায়।’ এই কথাটির মানে এখন হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় (SSC Scam) অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গত বছর চিত্রটা ছিল একদম ভিন্ন। সকাল থেকেই ছিল এসেছিল শুভেচ্ছার পাহাড়। বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন কর্মী-সমর্থকরা। বেলা বাড়তেই দলের ছোট-বড় নেতারা এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে যান।

বাংলা ইন্ডাস্ট্রির নায়ক নায়িকা থেকে শুরু করে অন্যান্যরাও এসেছিলেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে। বেহালার পার্টি অফিসে বিরাট আকারের কেক কেটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন উৎযাপন করা হয়। কিন্তু এই বছর! যেন মুহুর্তের মধ্যেই বদলে গেছে সব কিছু। একদা শাসক দলের মহাসচিবের জন্মদিন কাটল জেলের অন্ধকারে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন ৬ অক্টোবর। প্রতি বছর অনেক অনুষ্ঠানও হয় এই দিনে। কেক, মিষ্টি, উপহার আসে অনুগামী থেকে নিকট মানুষদের কাছ থেকে। এখন সেসব যেন স্বপ্ন। জেলের ঘুপচি কুঠুরিতে এবছরের জন্মদিনটা একাই কাটল পার্থর। প্রতি বছর এই দিনটায় নাকতলার বাড়িতে লম্বা লাইন পড়ত। উপহারের ডালি, শুভানুধ্যায়ীদের ভিড় লেগেই থাকত সারাদিন ধরে। আর এ বছর, শুধুই নিস্তব্ধতা, একাকিত্ব।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে। ঘুঁচেছে মন্ত্রিত্ব। হারিয়েছেন দলের সমস্ত পদও। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সেলে একাই শুয়ে বসে দিন কাটছে তাঁর।

তবে একটু বেলায় কিছু শুভানুধ্যায়ী অবশ্য জেলে পৌঁছন। কিন্তু তারপরই অদ্ভুত কাণ্ড। তিনি সেই শুভানুধ্যয়ীদের জানান, আজ তাঁর জন্মদিন শুধুমাত্র খাতায়-কলমে। আসলে তাঁর জন্মদিন আজ নয়। তাঁর মা আজকের জন্মদিন মানতেনই না। তাই তিনি আজ জন্মদিন পালন করেন না।

এর মধ্যে ষষ্ঠীর দিন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আইজি কারা বন্দিদের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেন। জানা যাচ্ছে, সেই উদ্বোধনে থাকার জন্য আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। তাই তাঁকে পুজোর কয়েকটাদিন নিজের সেলে বসেই কাটাতে হয়। এই ঘটনায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিছুটা ক্ষুব্ধও হন। সপ্তমীর দিন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেন প্রতিমা দর্শনের জন্য। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাতে নাকি রাজি হননি।

এর পর আবার, অষ্টমীর দিন সকালে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি প্রতিমা দর্শন করবেন এবং অঞ্জলি দেবেন। তাঁর এই আবেদন মঞ্জুর হয়। বন্দিদের ক্লাব থেকে কিছুক্ষণের জন্য সব বন্দিদের সরিয়ে ফাঁকা করে দেওয়া হয়। এরপর শুধুমাত্র পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একা ওই ক্লাবে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। নবমীর দিনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিকেলের দিকে প্রতিমা দর্শন করতে। আবারও বন্দিদের ক্লাব ফাঁকা করে দিয়ে তাঁকে নিয়ে গিয়ে প্রতিমা দর্শন করানো হয়। দশমীর দিনটা তিনি নিজের সেলেই কাটান।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর