বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘উত্তরবঙ্গের ব্যাপারে রাজ্য সরকার অসংবেদনশীল। সেই কারণেই উত্তরবঙ্গের মানুষ আলাদা রাজ্যের দাবি তোলেন’, উত্তরবঙ্গের (North Bengal) অন্তর্গত জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালবাজারের (Malbazar) হড়পা বান কাণ্ডকে সামনে তুলে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) সরকারের ‘কার্নিভাল’-কে (Carnival) তুমুল কটাক্ষ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তবে চুপ করে থাকেনি ঘাসফুল শিবিরও। শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তরফ থেকে কলকাতার পাশাপাশি অন্যান্য জেলার সেরা পুজোগুলিকে নিয়ে কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। গত দু’বছর করোনার কারণে সেরকম ভাবে অনুষ্ঠান পালন করা না গেলেও এ বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কার্নিভাল। তবে এই অনুষ্ঠানকে উদ্দেশ্য করে অতীতে একাধিকবার কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এক্ষেত্রে সরকারি টাকায় এ সকল কার্নিভাল করার কোন মানে হয় না বলে মন্তব্য করেন বহু নেতা-মন্ত্রীরা। এদিন সেই ধারা বজায় রেখে পুনরায় একবার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন বিজেপি নেতা।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীর গলায় উঠে আসে জলপাইগুড়ির মালবাজারের হড়পা বান কাণ্ড। গত বুধবার, দশমীর দিন মালবাজারের মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় আচমকাই হড়পা বান আসায় জলের তীব্র গতিতে ভেসে যায় অসংখ্য মানুষ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে আট জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত বহু। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কার্নিভাল বন্ধ রাখা উচিত ছিল বলে মন্তব্য প্রকাশ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা বলেন, “সরকারি পয়সায় কার্নিভাল হয়ে চলেছে। এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। মাল বাজারে যে ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে, তারপর সরকারের উচিত ছিল, কার্নিভাল বন্ধ করা। এটা উত্তরবঙ্গের ঘটনা বলে রাজ্যের তরফ থেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ওরা উত্তরবঙ্গের ব্যাপারে অসংবেদনশীল। সেই জন্য সেখানকার মানুষ পৃথক রাজ্যের দাবি করেন। আমার মনে হয়, কার্নিভাল এ বছর বন্ধ রাখা উচিত ছিল।”
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শুভেন্দুকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে কটাক্ষ করার পাশাপাশি তিনি বলেন, “ও একজন পাল্টিবাজ ছোকরা। এক সময় কার্নিভালের সঙ্গে শুভেন্দু যুক্ত ছিল। এখন বিজেপিতে চলে গিয়েছে বলে এর বিরুদ্ধে কথা বলছে। জলপাইগুড়ির মাল বাজারে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই প্রসঙ্গে সরকারের তরফ থেকে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির কার্নিভাল বন্ধ রাখার পাশাপাশি অন্যান্য সকল অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে আয়োজিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ওর মন্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”