‘মানিকবাবু টাকা নিয়েছেন কিনা, বলতে পারব না’, ২৪ ঘন্টার মধ্যে আচমকাই ভোলবদল তাপস মণ্ডলের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাত্র ২৪ ঘন্টা সময়ের মধ্যে আচমকাই ভোলবদলের সুর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের (Tapas Mondal) গলায়। গতকাল মানিকবাবুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি এনে তাপস জানান, “ডিএলএড-এ অফলাইন ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিটি পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হতো এবং তা পৌঁছে যেত মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।” তবে এদিন সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মুহূর্তে তাঁর দাবি, “পর্ষদে টাকা ঢুকতো। তবে সেই টাকা মানিকবাবু নিতেন কিনা, সে প্রসঙ্গে বলতে পারব না।”

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ সংক্রান্ত একের পর এক দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। সম্প্রতি, এই মামলার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসে ইডির। শুধু তাই নয়, মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের বিরুদ্ধেও বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির হদিস পায় তারা। এই মামলাতে গতকালই তাঁকে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

গতকাল সিজিও কমপ্লেক্স-এ প্রবেশের মুখে তাপস বলেন, “ডিএলএড কলেজে অফলাইন মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রতিটি পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়ে থাকত। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ টাকাটাই চলে যেতে মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।” পরবর্তীতে তদন্তকারী সংস্থার অফিস থেকে বেরোনোর সময় তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে মোট ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছিল।” এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে ইতিমধ্যেই চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায় সকলের।

প্রসঙ্গত, ইডি অতীতেই একাধিকবার দাবি করে, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের সহযোগী হিসেবে তাপস মণ্ডল পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিতেন। এক্ষেত্রে গতকাল তাপসের বয়ান তাদের সেই দাবিকেই এক প্রকার প্রমাণ করে। একইসঙ্গে তাপসবাবু বলেন, “সব মিলিয়ে ২১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। তবে ছাত্রের সংখ্যার হিসেব সঠিকভাবে মেলানো যায়নি। কাল এসে সকল হিসেব মিলিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানিয়েছি।”

Untitled design 67 3

তবে এদিন সিজিও কমপ্লেক্সে ঢোকার মুখে আচমকাই অন্য কথা বলতে শোনা গেল তাপস মণ্ডলকে। এদিন তিনি বলেন, “যা হিসেব দেওয়ার, কাল দেওয়া হয়েছে। যে টাকার কথা উঠছে, তা সরাসরি পর্ষদে যেত। আমার চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যেক ছাত্র বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হতো। তবে এক্ষেত্রে ওই টাকা মানিক ভট্টাচার্যের কাছে গিয়েছে নাকি অন্য কেউ নিয়েছে, সেটা বলতে পারবো না।” তবে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে আচমকাই নিজের অবস্থান থেকে কেন সরে এলেন তাপস, সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট কোন ধারণা মেলেনি।

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর