পাল্টাচ্ছে বিজেপির রাজ্য সদর দফতর! অপয়া বলেই কী মুরলীধর সেন লেনের ঠিকানা বদল?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : একসময় ঠিকানা ছিল ছয় নম্বর মুরলীধর সেন লেন। এই বাড়ির আঁতুরঘরেই জন্ম হয়েছিল বর্তমান সময়ের বঙ্গ বিজেপির (Bharatiya Janata Party) এক একজন তাবড় তাবড় নেতৃত্বের। কিন্তু, এই বাড়ির চিহ্ন যেন অতীত হতে চলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের। মধ্য কলকাতার এই পার্টি অফিসের স্থান বদল করে সেক্টর ফাইভের (Sector v) দিকেই করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই নতুনভাবে বহুতল পার্টি অফিস তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও এখনো পর্যন্ত তার ভিত্তিপ্রস্তর হয়নি। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই সল্টলেকের এক ভাড়াবাড়িতেই গেরুয়া শিবিরের কর্মকাণ্ড চালানো হবে বলেই জানা গিয়েছে।

কিন্তু এখন প্রশ্ন হল মধ্য কলকাতার এই বহু পুরনো মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিস পরিবর্তনের ঠিক কারণটা কি ? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক রাজ্যনেতার কথায়, ‘‌২০২১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিলেও সেটা করতে পারেনি বিজেপি। তাই এই অফিসকে অপয়া বলে মনে করেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারা। আবার সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেটাতে সাফল্য পেতে চায় বঙ্গ–নেতারা। এখান থেকে তা সম্ভব নয় বলেই আলোচনা করা হয়েছিল। তারপরই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’‌ এই জানুয়ারি মাসেই সেক্টর ফাইভের ভাড়া বাড়িতে বিজেপির রাজ্য দফতর স্থানান্তরিত হতে চলেছে।

স্বাস্থ্য ভবনের কাছে নতুন অফিস নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‌এই পার্টি অফিসে অসুবিধে হচ্ছিল। তাই নতুন পার্টি অফিস করতে হবে। জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে, কাজ করতে অনেক সময় লাগবে। তাই আপাতত ভাড়াবাড়িতে উঠে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’‌ আর বিষয়টিকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের (All India Trinamool Congress) রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তার কথায়, ‘‌এর কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, এক–একটি তলায় কী থাকছে, আদি বিজেপি, নব্য বিজেপি, সিবিআই–এর তাড়া খেয়ে বিজেপি হওয়া লোকজন। আর কী কী?‌’‌

Bjp party office

সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতার এই পার্টি অফিস থেকে ইতিমধ্যেই মালপত্র সরানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কর্মীদের আনাগোনা চলছেই পুরনো পার্টি অফিসে। বর্ষায় হাঁটু জল জমে যাওয়ার সমস্যা থেকে শুরু করে ইঁদুরের সমস্যা সবকিছু নিয়েই নাজেহাল হয়ে পড়েছিলেন মুরলীধর সেন রোডের পার্টি অফিসে নিয়মিত যাতায়াতকারী গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। একইসঙ্গে গাড়ি রাখার ক্ষেত্রেও বহু ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়েছে সকলকেই। সম্প্রতি বিজেপির রাজ্য দফতরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৈঠক করে যাওয়ার পরই রাজ্য পার্টি অফিসের ঠিকানা বদল করতে চলেছে বিজেপি। এখন আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন পার্টি অফিসের অবস্থান গেরুয়া শিবিরের বুকে কতটা আশাপ্রদ হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর