দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান! এবার সত্যি হতে চলেছে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী ট্রেন যাত্রা, পরিষেবা শুরু এই মাস থেকেই

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণপরিহবণ হল ট্রেন (Train)। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চেপেই পৌঁছে যান নিজেদের গন্তব্যে। এমতাবস্থায়, যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় চলছে রেলপথ সম্প্রসারণের কাজও। ঠিক সেই আবহেই এবার এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এল। জানা গিয়েছে, এবার রেলপথের মাধ্যমে সমগ্ৰ কাশ্মীরকে (Kashmir) কন্যাকুমারী (Kanyakumari) পর্যন্ত সংযুক্ত করার কাজ শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে।

এই প্রসঙ্গে মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কন্যাকুমারী পর্যন্ত পুরো কাশ্মীরকে রেলপথে সংযুক্ত করা হবে। ইতিমধ্যেই এর জন্য উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল সংযোগের ৯০ শতাংশ কাজও শেষ হয়েছে। পাশাপাশি, এই সংযোগ স্থাপনের জন্য টানেলগুলি সম্পন্ন হওয়া ছাড়াও বাকি কাজগুলিও দ্রুত চলছে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য যে, কাটরা-বানিহালের ১১১ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল সেকশন তৈরি হচ্ছে। রিপোর্ট অনুসারে, এটাই ছিল এই রুটের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অংশ। কারণ এই লাইনের ৯৭.৩৪ কিমি অংশ টানেলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে জম্মু থেকে বারামুল্লা পর্যন্ত পাহাড়, ঢাল এবং ভূমিকম্পপ্রবণের মত সংবেদনশীল এলাকা রয়েছে। এই কারণে, সেখানে ২৭ টি প্রধান সেতু ও ১০ টি ছোট সেতু নির্মাণ করতে হবে। এর মধ্যে ২১টি সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে, এই রুটের মাঝখানে চেনাব ব্রিজও রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পটি ঝুলে ছিল: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯০৫ সালে কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজা মুঘল রোডের মাধ্যমে শ্রীনগর থেকে জম্মুকে সংযুক্ত করার জন্য একটি রেললাইন স্থাপনের ঘোষণা করেছিলেন। যদিও, প্রাথমিক কাজ শেষে প্রকল্পটি আটকে পড়ে। এমতাবস্থায়, ২,৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে আবার কাজ শুরু করা হয়েছিল। এরপরে, ২০০২ সালে বাজপেয়ী সরকার এটিকে একটি জাতীয় প্রকল্প হিসাবে ঘোষণা করে এবং এর খরচ গিয়ে দাঁড়ায় ৬,০০০ কোটি টাকায়। যদিও আজ এই প্রকল্পের খরচ পৌঁছে গিয়েছে ২৭,৯৪৯ কোটি টাকায়।

rail

রেললাইন চালু হলে কাশ্মীরের অর্থনীতিতে বড় ধরণের পরিবর্তন আসবে: মূলত, এই রেললাইন স্থাপনের কাজটি ছিল খুবই কঠিন। যদিও, সমস্ত প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এখন এই নেটওয়ার্কটি সমাপ্তির পথে। এমতাবস্থায়, রেলপথ চালু হলে কাশ্মীরের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। এর পাশাপাশি ট্রেনে ভ্রমণের মাধ্যমেই পর্যটকরা রেলপথে কাশ্মীর যেতে পারবেন। এছাড়াও, কাশ্মীরের আপেলের মতো ফল সহজেই দেশের বাকি অংশে নিয়ে যাওয়া যাবে। সর্বোপরি, এর ফলে দক্ষিণ ভারত সরাসরি কাশ্মীরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর