বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য। বছরের পর বছর লাগামহীন ভাবে চলেছে চাকরি বিক্রি। অভিযোগ এমনটাই। আর এবার আরেক ধাপ এগিয়ে সামনে এল পিএইচ ডি-র (PHD) আসন বিক্রির অভিযোগও। শুভঙ্কর মান্না নামে কলকাতার এক বাসিন্দার দাবি, তাকে ও তার স্ত্রীকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Vidyasagar University) ম্যানেজমেন্টে পিএইচ ডি-র আসন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে নেওয়া হয়েছে টাকা। যার পরিমান প্রায় এক লক্ষ ৪০ হাজার।
ইতিমধ্যেই এই নিয়ে এফআইআর রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে সিঁথি থানা। খাস কলকাতার ওই বাসিন্দার অভিযোগ, ২০০৮ সালে কলকাতার এক প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিএ করেন তিনি। সেখানে মণিগ্রীব বাগ নামের এক ব্যক্তি শিক্ষক চইলেন। ডিগ্রি শেষ হয়ে যাওয়ার কিছু সময় পর সেই শিক্ষকই শুভঙ্কর পিএইচ ডি করতে ইচ্ছুক কি না জিজ্ঞেস করেন। সম্মতি থাকায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী পিন্টু রানা নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শুভঙ্করকে যোগাযোগ করতে বলেন মণিগ্রীব।
অভিযোগ, পিএইচ ডি তে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রথমে অল্প কিছু টাকা পিন্টুকে পাঠাতে বলা হয়। এর পরে কয়েক দফায় দেওয়া হয় প্রায় ৭০ হাজার টাকা। পিন্টুর কথায়, “স্যর আমাকে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে একটি রসিদ দেন। তাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাম্প ছিল। কিন্তু স্ট্যাম্পের সঙ্গে কাদের সই, তার উল্লেখ ছিল না।’’ এরপর টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত একটি ফাঁকা আসনে শুভঙ্কর নিজের স্ত্রীকে ঢোকাতে চান কি না, জানতে চান।
প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় তার জন্য পিন্টু ফের ৭০ হাজার টাকা দেন। এই পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চললেও স্ত্রীর জন্য দেওয়া সেই টাকার রসিদ দেওয়া হচ্ছিল না। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নেন শুভঙ্কর মান্না। আর তাতেই চক্ষু চড়কগাছ। জানা যায়, পিন্টু রানা নামে কোনও কর্মীই নেই সেখানে। পাশাপাশি মণিগ্রীব স্যরেরও কোনও যোগাযোগ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
এরপর ফোনে যোগাযোগ করা হলে পিন্টু বলেন, ‘‘আসন বিক্রির সঙ্গে যুক্ত নই। আমাকে টাকা পাঠানো হয়েছিল। তা যেখানে দেওয়ার কথা, দিয়েছি।’’ অন্যদিকে, মণিগ্রীবকে স্যরকে ফোনে ধরা হলে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি এ সবে যুক্ত নই। আমারই পিএইচ ডি করা নেই।’’ ভুয়ো পিএইচ ডি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আসলে আমি এখনও অ্যাওয়ার্ডেড হইনি। আমার কাজকর্ম এখনও জমা করা হয়নি।’’ পাশাপাশি ছাত্রের সঙ্গে টাকার লেনদেনের বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।