বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের (India) প্রতিটি প্রান্তেই রয়েছে হাজার হাজার গ্রাম। তবে, সেগুলির মধ্যে এমন কিছু গ্রাম রয়েছে যেগুলি তাদের অভিনব বিশেষত্বের মাধ্যমে এক আলাদা নজির তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, ওই গ্রামগুলি সম্পর্কে জানার পর অবাক হয়ে যান প্রত্যেকেই। সেই রেশ বজায় রেখেই বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন একটি গ্রামের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যেটিকে ভারত তথা এশিয়ার মধ্যে সবথেকে শিক্ষিত গ্রাম হিসেবে বিবেচিত করা হয়।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে ওই গ্রামটির নাম কি? জানা গিয়েছে, ওই গ্রামটির নাম হল ধোরা মাফি (Dhorra Mafi)। যেটি উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলায় অবস্থিত রয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, আলিগড় মূলত তালা তৈরির শিল্প এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এবার ওই জেলার এই বিশেষ গ্রামটি এখন খবরে শিরোনামে উঠে এসেছে।
গ্রামের প্রত্যেকেই হলেন উচ্চশিক্ষিত: ২০০২ সালে, এই গ্রামটি এশিয়ার সবথেকে শিক্ষিত গ্রাম হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই গ্রাম থেকেই অনেকেই বিজ্ঞানী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক এবং IAS অফিসার হয়েছেন। পাশাপাশি, এই গ্রামের শিক্ষার হার হল ৭৫ শতাংশ। ধোরা মাফি দেশের অন্যতম উন্নত গ্রাম। গ্রামটিতে ২৪ ঘণ্টা অর্থাৎ সারাদিন জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা সচল থাকে। এছাড়াও, ওই গ্রামের জনসংখ্যা হল প্রায় ১১ হাজার।
গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে বিরাট সুযোগ-সুবিধা: উত্তরপ্রদেশের এই গ্রামে বেশির ভাগ সরকারি আধিকারিকরা বসবাস করেন। প্রায় প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরে বা কোনো বড় পদে কাজ করেন। এই গ্রামটি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কাছে অবস্থিত রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ মুস্তফা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ডঃ শাদাব বানো AMU-এর অধ্যাপক এবং ডঃ নাইমা গুরেজও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পাশাপাশি, IAS অফিসার ডঃ সিরাজও এই গ্রামেরই বাসিন্দা।
বাসিন্দারা শিক্ষাকে উপার্জনের মাধ্যম বানিয়েছেন: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ধোরা মাফি গ্রামের মানুষরা জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষির পরিবর্তে শিক্ষার ওপর নির্ভরশীল। ডঃ নুরুল আমিন হলেন ওই গ্রামের প্রধান। বছরের পর বছর ধরে কোনো বৈষম্য এবং বিভেদ ছাড়াই ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে সেখানে বসবাস করে আসছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ওই গ্রামে ইকরা পাবলিক স্কুল, কলেজ এবং মুনলাইট স্কুল রয়েছে।