বাংলা হান্ট ডেস্ক : একটার পর একটা পরীক্ষায় পাশ করে এগিয়ে চলেছে চন্দ্রযান 3। আশা করা হচ্ছে আগামী সময়ের সমস্ত পরীক্ষাও সফলভাবে উত্তীর্ণ হবে ইসরোর এই স্যাটেলাইট। এমনকি সব ঠিক থাকলে আর কদিন পরেই চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করবে ভারতের চন্দ্রযান ৩। আর তার আগেই বড়সড় ঘোষণায় চমক দিলেন ইসরোর চেয়ারম্যান।
গোটা দেশ যখন চন্দ্রযান-3 এর সফল ল্যান্ডিং-এর জন্য প্রার্থনায় ব্যস্ত ঠিক তখনই এক বড় খবর দিলেন ISRO চেয়ারম্যান এস সোমনাথ। তিনি জানিয়েছেন, ল্যান্ডার বিক্রম-র কোনও সেন্সর এবং দুটি ইঞ্জিন কাজ না করলেও বিক্রম সফট ল্যান্ডিং করতে সক্ষম হবে। খুশির খবর তো বটেই তার সাথে আশ্চর্যেরও। সকলের মনেই প্রশ্ন, কীভাবে এত নিশ্চিত হচ্ছেন তিনি?
ইসরো সূত্রে জানা যাচ্ছে, ল্যান্ডার বিক্রমের ডিজাইন এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে যাতে যে কোন পরিস্থিতি অনায়াসে সামলে নিতে পারে এটি। এস সোমনাথ জানিয়েছেন, ‘যদি সব ফেল করে যায়। সব সেন্সর ফেল করে যায়, কিচ্ছু কাজ না করে, তাহলেও বিক্রম ল্যান্ড করতে পারবে। এভাবেই সেটিকে ডিজাইন করা হয়েছে।’ সম্প্রতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্য়োগে আয়োজিত Chandrayaan-3: Bharat’s Pride Space Mission- শীর্ষক আলোচনাসভায় এই কথা রেখেছেন তিনি।
এই আলোচনাসভায় তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা এটাও দেখেছি যে যদি বিক্রমের দুটি ইঞ্জিন ল্যান্ডিংয়ের সময় কাজ না করলেও ল্যান্ড করতে সমস্য়া হবে না।’ তবে একটা চ্যালেঞ্জ কিন্তু রয়েই যাচ্ছে। এস সোমনাথ জানিয়েছেন, আড়াআড়ি ভাবে রাখা বিক্রম ল্যান্ডারকে উল্লম্ব ভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করানোটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আসলে অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আড়াআড়ি ভাবে এগিয়ে চলবে ল্যান্ডারটি। এবার সেটিকে চাঁদের মাটিতে লম্বালম্বি অবতরণ করানো হবে।
জানা যাচ্ছে এই প্রক্রিয়াটিই নাকি সবচেয়ে জটিল। এর আগে চন্দ্রযান ২ অভিযানের সময় এই স্টেপেই বিফল হয়েছিল ইসরো। জ্বালানি খরচের হিসেব থেকে শুরু করে বাকি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চললেই কেল্লাফতে। তবে এতে সামান্য বদল এলেও যাতে ল্যান্ডারের সমস্যা না হয় সেদিকটাও ভেবে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরো চেয়ারম্যান। আর এই সংবাদ যে সমস্ত ভারতীয়ের কাছেই স্বস্তির সে কথা বলাই বাহুল্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই শ্রীহরিকোশ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান ৩। অরবিট ম্যানুভারিংয়ের মাধ্যমে কক্ষপথ ধরে চাঁদের দিকে নীচে নামতে থাকবে চন্দ্রযান ৩। আর সেই ‘লোয়ারিং ম্যুনুভারিং’-এর প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয় গত ৫ অগস্ট। আর আজ চাঁদের আরও কাছে চলে যাবে চন্দ্রযান ৩। তারপর জটিল অঙ্ক কষে তৈরি পদক্ষেপ মেনে চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করার কথা চন্দ্রযান ৩-এর। উল্লেখ্য, চন্দ্রযান ৩ এর ল্যান্ডারে রয়েছে ৪টি পে-লোড। রোভারে রয়েছে ৩টি পে-লোড।