বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতির পর এবার রেশনে দুর্নীতি (Ration Scam) নিয়ে উথাল-পাথাল রাজ্য। টানা ৫৩ ঘণ্টা অভিযানের পর গত শুক্রবার বাকিবুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorates)। আর এই বাকিবুরের গ্রেফতারির পর একাধিকবার তার সঙ্গে এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার কথা উঠে এসেছে।
রেশনে দুর্নীতি কাণ্ডে বিরোধীদের নিশানায় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। আবার বাকিবুর রহমানের সঙ্গেও প্রভাবশালী মন্ত্রী যোগের কথা জানিয়েছে ইডি। এই আবহেই এবার বাকিবুর কাণ্ডে মুখ খুললেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ঠিক কী বললেন তিনি?
এই প্রসঙ্গে মমতার মন্ত্রী বলেন, ‘কালিমালিপ্ত করতে চাইলেই তো আর করা যায় না। যে রাজনীতির মধ্যে পরিবারকে টেনে নিয়ে আসা হয় তাতে আমার বিশ্বাস নেই। রাজত্ব হল গাড়ির চাকার মতন, যে চাকা ঘুরে আসে। আজ যে উপরে, কাল সে নীচে। আমি কিছু বলবো না, ভবিষ্যৎ প্রমাণ দেবে আমি কোথায়, কত, কী ভাবে কাজ করেছি।”
প্রসঙ্গত, বাকিবুর গ্রেফতারির পর থেকে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম একাধিকবার উঠে এসেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জোর আক্রমণ করেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। মন্ত্রীর মেয়েকে জন্মদিনে বাকিবুর স্করপিও গাড়ি উপহার দিয়েছেন বলেও শুভেন্দু অভিযোগ তোলেন। এবার এই বিষয়েই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
আরও পড়ুন: হাসপাতালেই অ্যাকশন! কালীঘাটের কাকুকে নিয়ে বিরাট নির্দেশ আদালতের, তোড়জোড় শুরু ED-র
বাকিবুরের গ্রেফতারি:
গত বুধবার নদিয়ার শিমুলিয়ায় বাকিবুর রহমানের (Bakibur Rahaman) চালকলে হানা দেয় ইডি। তার রাজারহাট ফ্ল্যাটে পৌঁছে যান আধিকারিকরা। বুধবার সকাল ৬টা থেকে কৈখালির আবাসনে হানা দেয় ইডি। চলে চিরুনি তল্লাশি। টানা ৫৩ ঘণ্টা অভিযানের পর ইডির হাতে গ্রেফতার হন তিনি।
নদিয়া জেলার কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার ভিত্তিতে ২০২২ সালে ইডি একটি মামলা রুজু করে বাকিবুরের বিরুদ্ধে। কেন্দ্র সরকারের দেওয়া রেশনের আটা চুরি করার পাশাপাশি নিম্নমানের আটা সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে বাকিবুরের বিরুদ্ধে। তারপরই শুরু হয় তদন্ত।
পূর্বে বাকিবুরের চালকল ও আটাকলে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর সরকারি স্ট্যাম্প ও সিল মিলেছে বলে ইডি সূত্রে খবর। চালকলের পাশাপাশি হোটেল ব্যবসায়ী বাকিবুর এলাকায় বিশাল প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। বাকিবুরের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ নথি উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। মিলেছে পাহাড়প্রমাণ সম্পত্তির খোঁজ। যদিও সম্পত্তির উৎস, হিসাব তিনি দিতে পারেননি।
জানা যায় ২০১৬ সাল থেকে ফুলেফেঁপে ওঠে বাকিবুর। কলকাতায় একাধিক রেস্তরাঁ, পানশালা ও হোটেলের মালিক এই বাকিবুর রহমান। নার্সিংহোম, শপিংমলেও বাকিবুরের অর্থ রয়েছে বলে দাবি ইডির। এর আগে ২০২০ সাল ও ২০২১ সালে বাকিবুরের সংস্থার উপর দায়ের হওয়া দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি অভিযান চালায় রাজ্য পুলিশ। প্রচুর পরিমাণে আটা উদ্ধার হয়। এরপর ২০২২ সালে বাকিবুরের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার আয়কর ফাঁকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে।
ফিরহাদ হাকিমের কুমন্তব্যে তোলপাড় রাজ্য! কুণাল বললেন ‘ওই বিপ অংশ…’