বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিকে (Primary Recruitment) ২০১৬-র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১০দিনের মধ্যে প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ আদালতের। ১০ দিনের মধ্যে প্রাথমিকেরর ৪২,৯৪৯ প্রার্থীর প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। বুধবার কলকাতা বিচারপতির এজলাসে ২০১৪ সালে টেট সংক্রান্ত মামলায় ঠিক এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
শুধু তাই নয়, আগে প্যানেল প্রকাশিত হয়ে থাকলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে (West Bengal Board of Primary Education) হার্ড-সফট কপি পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ১৫ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে টেট পাশ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে এদের মধ্যে ৪২,৯৪৯ জন চাকরি পান। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসে।
মামলা করে অভিযোগ তোলা হয় যে ওই ৪২,৯৪৯ হাজারের মধ্যে ৩২,০০০ প্রার্থীই ‘অপ্রশিক্ষিত’। তাদের অধিকাংশের অ্যাপ্টিটিউড টেস্টই নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ইন্টারভিউও সঠিক নিয়ম মেনে হয়নি। মামলাটি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যায়। অভিযোগের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে গত বছর ১২ মে মামলাকারীদের পক্ষে রায় দেন বিচারপতি।
২০১৪ সালে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় প্রথমে একজোটে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গাঙ্গুলি। পরে সংখ্যা পরিবর্তন করে হয় ৩২ হাজার। পর্ষদকে বিচারপতির নির্দেশ ছিল, আগামী চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বিচারপতি এও বলেছিলেন, চাকরিচ্যুতরা আগামী ৪ মাস স্কুলে যেতে পারলেও তাদের পার্শ্বশিক্ষকের বেতন দেওয়া হবে। তবে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরিচ্যুতরা অংশ নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের পোয়া বারো! জানুয়ারি মাসে মোট ১২ দিন বন্ধ থাকবে সরকারি অফিস-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান চাকরিহারাদের একাংশ। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে হবে না। তারা যেমন ছিলেন তাই থাকবেন। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নতুন নিয়োগ পক্রিয়া নিয়ে দেওয়া নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই ৩২ হাজার শিক্ষককেও। তারা সেখানে উত্তীর্ণ না হলে চাকরি খোয়াবেন। মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টেও। ওদিকে এরই মধ্যে টেট উত্তীর্ণদের প্যানেল প্রকাশের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে পৃথক মামলা করেন বেশ কয়েক জন চাকরীপ্রার্থী।
তাদের দাবি ছিল মেধাতালিকা স্পষ্ট না হওয়ায়, নিয়োগ পাননি। তারাও চাকরি পাওয়ার যোগ্য। আর এরপরই বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে ৪২,৯৪৯ চাকরি প্রাপকের ওই প্যানেল আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে পর্ষদের আইনজীবী জানান, আগেই আদালতের নির্দেশে প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। আগে প্যানেল প্রকাশিত হয়ে থাকলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে হার্ড-সফট কপি পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।