বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জ্যোতিপ্ৰিয়র (Minister Jyotipriya Mallick) লেখা চিঠিতে যেই ‘ডাকু’ নাম নিয়ে এত শোরগোল সেই নামেই এবার আরেক টুইস্ট। টাকার লেনদেন নিয়ে মেয়েকে লেখা চিঠিতে নামের তালিকায় শেখ শাহজাহানের পাশে ‘ডাকু’-র (Daku) নাম লিখেছিলেন ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেই ‘ডাকু’ কে এই নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও সেই সময়ই ইডি জানিয়ে দেয়, ‘ডাকু’ হলেন বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য (Shankar Addya)। বর্তমানে তিনিও রেশন দুর্নীতি মামলায় জেল বন্দি। কিন্তু সম্প্রতি ইডির দাবি খারিজ করে দিয়েছেন শঙ্কর। তিনি জানিয়েছেন তিনি ‘ডাকু’ নন। তাই তাকে যেন ওই নামে না চিহ্নিত করা হয়।
রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলায় কিছুদিন গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্ৰিয় ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্করের ঠিকানায় টানা ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর তাকে গ্রেফতার করে ইডি। তবে সেই সময় থেকেই তার স্ত্রী দাবি করতে থাকেন, মধ্যরাতে তাদের নাকি একটি কাগজ দেখানো হয়েছে। সেই কাগজ দেখিয়ে বলা হয়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তার নাম বলেছেন। এই নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়।
পরে এই বিষয়ে আদালতে ইডি জানায়, হাসপাতালে থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয়র লেখা এক চিঠি উদ্ধার হয়। ইডি তরফে সেই চিঠি তুলে দাবি করা হয় চিঠিতে কার কাছে পাওনা কত, কাকে কত টাকা দিতে হবে, সেই সব কিছুর উল্লেখ ছিল। সেই চিঠি থেকেই ‘ডাকু’ ওরফে শঙ্করের নাম সামনে যে বলে আদালতে জানায় ইডি। চিঠির সূত্র ধরেই শঙ্করের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল সংস্থা। হদিস মেলে শঙ্করের শতাধিক বিদেশি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার। এই সংস্থা গুলোর মাধ্যমেই জ্যোতিপ্ৰিয়র রেশন দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলেও আদালতে জানায় ইডি।
ইডি সূ্ত্রে খবর, হেফাজতে নিয়ে জেরা করার সময় শঙ্কর বার বার ইডিকে জানিয়েছে যে, তিনি ‘ডাকু’ নন। তাহলে কী সত্যিই তিনি ডাকু নন? ভুল লোককে আটকে রাখা হয়েছে? তবে ইডির দাবি, এই সবই মিথ্যে। আসলে শঙ্কর ইডিকে ভুল পথে চালিত করতেই নিজের ‘ডাকনাম’ অস্বীকার করছেন। আর শঙ্করই যে ‘ডাকু’ সেই নিয়ে ইডির হাতে রয়েছে পাকা প্রমাণ।
আরও পড়ুন: নজিরবিহীন! বিচারপতি সেন বনাম গঙ্গোপাধ্যায় সংঘাতে বিরাট নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, রাজ্যকেও নোটিস
ইডি সূত্রে খবর, শঙ্করের বিরুদ্ধে পুরোনো কিছু মামলার কাগজপত্র, এফআইআর এর নথি ইতিমধ্যেই ইডির হাতে এসেছে। তাতেই কলকাতা হাই কোর্টের ২০১৯ সালের একটি ফৌজদারী মামলার নথিতে শিরোনামে ইংরেজি হরফে লেখা আছে ‘শঙ্কর আঢ্য ওরফে শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকু বনাম পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং অন্যান্য’। অর্থাৎ শঙ্করই যে ডাকু এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।