বাংলাহান্ট ডেস্ক : ট্রেনে কখনো ফল আবার কখনো মেয়েদের পোশাক বিক্রি করেই জীবন জীবিকা নির্বাহ হয় তাঁর। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার যাত্রীরা অনেকেই তাঁকে চেনেন। আমরা কথা বলছি দেগঙ্গার আমুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা শ্যামল দাঁ’কে নিয়ে। হকারির পাশাপাশি তাঁর সৃষ্টি এখন তাঁকে দিয়েছে বিশেষ পরিচিতি।
শ্যামল বাবু পেশায় হকার হলেও, তাঁর নেশা হল কবিতা লেখা। কলকাতা বইমেলায় তাঁর লেখা ২৪ টি কবিতার সংকলন ‘খালের খেয়া’ বেশ উন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল। শ্যামল বাবুর ইচ্ছা আগামী বছর ১০০ টি কবিতা নিয়ে বই প্রকাশ করার। হকারির মাঝে একটু ফাঁক পেলেই বসে পড়েন কলম কাগজ নিয়ে কবিতা লিখতে।
আরোও পড়ুন : দীঘা পুরী তো অনেক হলো! এবার শিয়ালদা থেকে লোকালে করে চলে যান এই অফবিট লোকেশনে, দারুণ লাগবে
ট্রেনের নিত্যযাত্রী স্কুলের দিদিমনিরা শ্যামল বাবুর এই প্রতিভা লক্ষ্য করেন। তারাই শ্যামল বাবুকে অনুপ্রেরণা যোগান এগিয়ে যাওয়ার। ছোট থেকে অত্যন্ত দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে বড় হতে হয়েছে শ্যামল বাবুকে। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় অর্থের অভাবে পুজোর সময় জোটেনি নতুন জামা। সেই দুঃখকে সঙ্গে করে শ্যামল বাবু লেখেন জীবনের প্রথম কবিতা, ‘দূখির পুজো’।
আরোও পড়ুন : দিঘায় ঘুরতে যাওয়াই হল কাল! গণধর্ষণের শিকার তরুণী, গাছে বেঁধে পৈশাচিক কাণ্ড পর্যটকের সঙ্গে
অর্থের অভাবে মাধ্যমিকের পর আর পড়াশোনা করতে পারেননি। কখনো দোকানে কাজ করে, আবার কখনো হকারি করে চলেছে সংসার। তবে শত দারিদ্রতার মাঝেও থেমে থাকেনি কবিতা লেখা। হকারি করার মাঝে মাঝেই ছন্দ মিলিয়ে বলে ওঠেন নিজের লেখা কবিতার লাইন। মজাও পান সকলে শুনেই।
এছাড়াও শ্যামল বাবু দত্তপুকুর, গুমা, ঠাকুরনগর-সহ বিভিন্ন স্টেশনের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনাকে সঙ্গী করে লিখে ফেলেন পাতার পর পাতা কবিতা। অনেকেই শ্যামল বাবুকে ‘হকার কবি’ বলেও ডেকে থাকেন। দারিদ্রতার মাঝেও নিজের সৃষ্টিকে নিয়ে দিনের শেষে ভালো রয়েছেন শ্যামল বাবু।