পুলওয়ামা হামলার ৫ বছর, অভিযুক্ত ১৯ জনের ১৫ জনেই নিকেশ, বাকি ৪ জন কোথায়?

বাংলা হান্ট ডেস্ক : পাঁচ বছর আগে ঠিক আজকের দিনেই ঘটেছিল পুলওয়ামা সন্ত্রাসী হামলা (Pulwama Attack)। ভয়াবহ হামলার পাঁচ বছর কেটে গেলেও দেশবাসীর মনে এখনও দগদগে তার স্মৃতি। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, ঘটনার পর এতগুলো দিন কেটে গেলেও আজও হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী মাওলানা মাসউদ আজহার (Maolana Masood Azhar) ভারতের (India) নাগালের বাইরে। যদিও তাকে নিয়ে একাধিকবার পাক সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে ভারত। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তবে ভারতও যে হাত পা গুটিয়ে বসে আছে এমনটাও কিন্তু নয়। এই ঘটনার পর কূটনৈতিক কৌশলের সঙ্গে সামরিক কৌশলেও শান দেয় ভারত। চারিদিক থেকে কোনঠাসা করতে থাকে পাকিস্তানকে। সেই সাথে হামলায় জড়িত থাকা ১৯ সন্ত্রাসীর মধ্যে ১৫ জনকেই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দারা। এই ১৫ জনের কেউ গ্রেফতার হয়েছে তো কেউ আবার এনকাউন্টারে মারা গেছে। তবে মূল চক্রী আজহার, তার ভাই রউফ আসগর, মহম্মদ ইসমাইল এবং আম্মার আলভি এখনও পলাতক।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ৭৮ টি গাড়িতে ২৫০০ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে কনভয় রওনা হয়েছিল জম্মু থেকে শ্রীনগরের দিকে। ন্যাশনাল হাইওয়ের উপর সেই কনভয়ের মাঝে আচমকাই ঢুকে পড়ে একটি বাস। মুহূর্তের মধ্যে বিষ্ফোরণ ঘটে যায় ঐ বাসে। ৭৬ তম ব্যাটালিয়ানের ৪০ জন সেনা জওয়ান শহিদ হন ঐ বিষ্ফোরণে। এরপরেই হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গী সংগঠন জইস-ই-মহম্মদ।

আরও পড়ুন : জ্ঞানবাপীতে প্রথমবার পুজো দিলেন যোগী! দাবি করলেন আরও ৩টি গ্রামের, আদিত্যনাথের মন্তব্যে শোরগোল

তদন্ত করতে গিয়ে নাম আসে পাকিস্তানি সন্ত্রাসী মহম্মদ ওমর ফারুকের। এনকাউন্টারের পর তার মোবাইল থেকে এমন অনেক গোপন তথ্য উদ্ধার হয় যা ভারতীয় এজেন্সির চিন্তা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। উল্লেখ্য, মহম্মদ ওমর ফারুক হল ১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট IC-814 হাইজ্যাক করার অভিযোগে অভিযুক্ত ইব্রাহিম আতহারের ছেলে। তদন্তে জানা যায়, বিষ্ফোরণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ২০১৬ সালে আফগানিস্তান গিয়েছিল ফারুক।

আরও পড়ুন : হাইকোর্টের ধমকের পরেও শোধরাল না পুলিস! সন্দেশখালি নিয়ে নয়া চাল, ঘুর পথে জারি ১৪৪ ধারা

সেখানে দু’বছর ট্রেনিং নেওয়ার পর ২০১৮ সালে ভারতে আসে এই সন্ত্রাসী। এখানে এসে জইশ-ই-মহম্মদের কমান্ডার নিযুক্ত করা হয় তাকে। NIA-এর মতে, শাকির বশির, ইনশা জান, পীর তারিক আহমেদ শাহ এবং বিলাল আহমেদ কুচি আরও জৈশ সন্ত্রাসীরা এখানে ঘাঁটি গেয়েছিল। এদের মধ্যে বশির ২০১৮ সাল থেকে জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়েতে নিরাপত্তা বাহিনীর কনভয়ের রেকিং করতেন। আরডিএক্স, জেলটিন স্টিকস, অ্যালুমিনিয়াম পাউডার এবং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত সব বিস্ফোরক বশিরের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। এইসব মিশিয়ে একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) প্রস্তুত করা হয়।

আরও পড়ুন : সন্দেশখালি কাণ্ডে মুখ পুড়ল রাজ্যের! হাইকোর্টে বড় জয় শুভেন্দুর

এনআইএ-এর মতে, ফারুক, মহম্মদ কামরান, মহম্মদ ইসমাইল এবং কারি ইয়াসির ( সকলেই পাকিস্তানি নাগরিক) আদিল আহমেদ দার (স্থানীয় আত্মঘাতী বোমারু) হামলার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। ইসমাইল পলাতক থাকলেও বাকি তিনজন এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে। উল্লেখ্য, এনআইএ-র মতে, আজহার পুলওয়ামার পরে আরও একটি হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে তা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়নি। এরপর ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF) 26 ফেব্রুয়ারি এই হামলার পাল্টা জবাব দেয়। সীমান্ত অতিক্রম করে বালাকোটে জেএম প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করে।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর