বাংলা হান্ট ডেস্ক: নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে পৌঁছে যেন ধীরে ধীরে অনেক বেশি ঝাঁঝালো হয়ে উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য। আর এবার মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Baerjee) নিশানায় ভারত সেবাশ্রম সংঘ (Bharat Sevashram Sangha), এবং রামকৃষ্ণ মিশনের (Ramkrishna Mission) মহারাজরাও (Maharaj)।
শনিবার সরাসরি আরামবাগের নির্বাচনী সভা থেকে আচমকাই মহারাজদের একাংশকে একহাত নিয়ে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করার অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মহারাজদের তোপ দেগে এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, ‘সব সজ্জন সমান হয় না। সব সাধুও নয়। আমাদের মধ্যেই কি সবাই সমান আছেন? আমি আইডেনটিফাই করেছি বলেই বলছি।’
এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত বোমা ফাটিয়েই এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘ভারত সেবাশ্রমকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় ওরা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে।’ এরপরেই সরাসরি নাম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। কার্তিক মহারাজ। তিনি ওখানে বলছেন- তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেব না। সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না, কারণ তিনি ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করে দিচ্ছেন। আমি আইডেনটিফাই করেছি, কে কে করেছেন।’
এরপরেই এদিন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে বাম জমানার প্রসঙ্গ। এদিন মহারাজদের অতীতের কথা মনে করিয়ে দিয়েই তৃণমূল নেত্রী বলেন,’আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণমিশন আছে। ওদের আমি কী হেল্প করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলাম। আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে, স্বাধীকার নিয়ে আমি কিন্তু পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম। মা, বোনেরা আসত, তরকারি কেটে দিত। সিপিএম কিন্তু আপনাদের কাজ করতে দিত না। নদিয়াতে ইস্কনকেও ৭০০ একর জমি দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: ‘মমতাকে ছাড়ব না’, জেল থেকেই বেরিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে নেওয়ার হুমকি সন্দেশখালির মাম্পির
সাধু-সন্তদের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এদিন মমতা বলেন, ‘আমিও জানি একটা, দুটো থাকবে। দিল্লি থেকে ওদের কাছে নির্দেশ আসে, বলে একে ভোট দিতে বলো। কিন্তু সাধু, সন্তরা কেন একাজ করবেন? ওদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। ওদের যারা দীক্ষা নেন, তাঁরা ওই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে রয়েছেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন তো ভোট দেয় না। তাহলে অন্যকে কেন ভোট দিতে বলবে?’
যদিও সেইসাথে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন সবাই এই তালিকায় নেই। তাঁর কথায় , ‘কেউ কেউ ভায়োলেট করছে, সবাই নয়। কিন্তু মনে রাখবেন, স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িটাই থাকত না, যদি এই মেয়েটা না বেঁচে থাকত।’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি স্বামীজির বাড়ি নাকি দখল করার চেষ্টা হয়েছিল। সেই খবর কানে আসা মাত্রই নাকি তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়ে স্বামীজীর বাড়ি রক্ষা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।