বাংলা হান্ট ডেস্ক: দিনভর চাষের খেতে খেতমজুরি করে সংসার চালানো অন্ধপ্রদেশের (Andhra Pradesh) এক সামান্য গৃহবধূ (House Wife) থেকে রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রিধারী (PhD Degree) একজন ডক্টর। তাই দেখতে নিতান্ত সাধারণ হলেও আদিবাসী পরিবারের এই গৃহবধূ মহিলা কিন্তু এখন দেশের অসংখ্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনুপ্রেরণা। তাই পেশায় দিনমজুর হলেও দরিদ্র পরিবারের এই গৃহবধূর নামের পাশেই থাকা ডক্টরেট উপাধিই তাঁকে আলাদা করে তোলে আর পাঁচজন সাধারণ গৃহবধূদের থেকে।
অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের বাসিন্দা লড়াকু এই মহিলার নাম সাখে ভারতী (Sake Bharathi)। দীর্ঘ ৬ বাছরের কঠোর পরিশ্রমের পর গত বছরেই এই পিএইচডি ডিগ্রি পেয়েছেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের বাসিন্দা সাখে ভারতী ছোটবেলা থেকেই বড় হয়েছেন অভাবের সংসারে। কন্যা সন্তান হওয়ায় বাবার কাছে আজীবন শুনতে হয়েছে কটু কথা। কিন্তু শত দারিদ্রতা এবং প্রতিকূলতাকে জয় করতে ছোট থেকে তিনি আঁকড়ে ধরেছিলেন পড়াশোনাকে।
ভারতীর চোখে এই স্বপ্ন বুনে দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর দাদু। সাখে ছাড়াও অভাবের সংসারে ছিল তাঁর আরও দুই বোন। তাই আর পাঁচটা মেয়ের মতোই মাত্র ১৮ বছর বয়সেই এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের সাথে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সাখের। সে সময় অনেকেই ভেবেছিলেন সংসারের অন্যান্য মেয়েদের মতোই অধরা থেকে যাবে সাখের স্বপ্ন।
কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজের পড়াশুনা চালিয়ে গিয়েছিলেন সাখে। আর এই অসাধ্য সাধনের কাজে এই গৃহবধূ বরাবরই পাশে পেয়েছেন তার স্বামী শিবপ্রসাদকে। স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার পরেই মা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তা সংসারের পাশাপাশি একরত্তি মেয়েকে সামলে কলেজের পড়াশোনা চালানো মোটেই সহজ ছিল না ভারতীর কাছে।
আরও পড়ুন: লাইনে দাঁড়ানোর দিন শেষ! ভক্তদের ডাকে সাড়া দিলেন জগন্নাথ, রথের আগেই খুলছে মন্দিরের চারটি দরজা
কিন্তু নিজের স্বপ্নকে কখনও হারাতে দেননি এই লড়াকু ভারতী। তাই সংসারের দায়িত্ব আর পড়ার খরচ চালানোর জন্য স্বামীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করতেন খেত মজুরের কাজ। দিনের বেলা চাষের কাজের পাশাপাশি সংসার সামলানোর পর কলেজ করে বিকেলে বাড়ি ফেরার পর মন দিয়ে করতেন পড়াশোনা।
এইভাবেই অনন্তপুরের এসএসবিএন ডিগ্রি অ্যান্ড পি.জি কলেজ থেকে রসায়নে এমএসসি পাস করেন ভারতি। অধ্যাপকরা সাহস দেওয়ায় এরপর এই মেধাবী ছাত্রীই আরও একধাপ এগিয়ে যান নিজের স্বপ্নপূরণের পথে। শ্রীকৃষ্ণ দেবরায়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে নিজের নাম নথিভুক্ত করার পর বাইনারি লিক্যুইড মিক্সচার নিয়ে শুরু করেন গবেষণা। তারপরেই তাঁর নামের পাশে জুড়েছে ডক্টরেট সম্মান। জানা ভারতি উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পেয়েছিলেন স্কলারশিপও।