শাসক দলের ভোটের হিংসা পানীয় জলে, বীরভূমে

l
নিজস্ব সংবাদদাতা, রামপুরহাট-বীরভূম

সম্প্রতি দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। ফলাফলে দেখা গেছে, খুব কম ভোটের মার্জিন এ শাসক দল জেলার বোলপুর ও বীরভূম কেন্দ্রের দুটি আসন ধরে রাখতে পেরেছেন।কিন্তু নির্বাচনের আগে বুথ ভিত্তিক সভাপতিরা যে লিড ঘোষণা করেছিল, তার একটিও ঠিক তো পূর্ন হয়নি। ভোটে লিড কম হওয়ায় শাসক দলের কেউ কেউ দায় স্বীকার করে নিয়েছে খারাপ ফলের জন্য। কিন্তু এর পরেও শাসক দলের নেতাকর্মীরা যে দলের মধ্যে কোনো আলোচনা ছাড়াই অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করবে তা ভাবাই যায়না ।

 

জেলা জুড়ে তীব্র দাবদাহে যখন সমস্ত পরিবেশ উত্তপ্ত ।জলের হাহাকারে কীট-পতঙ্গ পশুপাখি নাকাল হয়ে ঘুরছে এক ফোঁটা জলের জন্য ।তখন রাজ্যের শাসক দলের নেতাকর্মীরা ভোটের লিড কম পাওয়ার কারণে,বীরভূমের বোলপুর থানার মহুলারা গ্রামে এক রাতে ১০ টি টিউবয়েল নষ্ট হয়ে যায়। সর্বসাধারণের ব্যবহার্য পানীয় জলের ট্যাপ গুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। চাপা কলের হ্যান্ডেল খুলে নিচ্ছে এমনটাই এলাকাবাসী তথা বীরভূমের সাধারণ মানুষদের অভিযোগ।

f6d70 img 20190525 wa0028

এক প্রশ্নের উত্তরে রামপুরহাট ২নং ব্লকের মাড়গ্রাম থানার বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সমস্ত গ্রাম জুড়ে আজ তিন দিন থেকে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ আছে। এলাকাবাসীর পক্ষে চাঁদ মুহাম্মদ জানাচ্ছেন, রাতের অন্ধকারে গ্রামের সব পানীয় জলের ট্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে। শাসক দলের নেতাকর্মীরা।আমরা সাধারণ মানুষ বলতে গেলে বলে এইতো সবে ভোট পার হল। অফিস পুরোপুরি খুলুক। পাইপ মেরামতির কাজ শুরু হবে। তবেই কলে জল আসবে।

অপরদিকে সাধারণ মানুষ যারা ওই ট্যাপের জলের ওপর নির্ভরশীল। তারা আজ পানীয় জল পাচ্ছেনা। জলের জন্য অন্যের বাড়িতে যেতে হচ্ছে চাপা কলের জল নিতে ।যে গ্রামে নল বাহিত জলের ট্যাপ নেই। সেখানে চাপা কলের হাতল ভেঙে দিয়েছে রাতের অন্ধকারে এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে মারগ্রাম থানার বিষ্ণুপুরে ।অন্যদিকে রামপুরহাট ১ নং ব্লকের বড়শাল পঞ্চায়েত এলাকায় ওই একই পরিস্থিতি বলে সূত্রের খবর।

একই অভিযোগ পাওয়া গেছে লাভপুর কির্নাহার ও নানুর পঞ্চায়েত এলাকাতেও। সেখানেও জলের ট্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূলের কর্মীরা। আজ এনিয়ে বচসা থেকে শাসকদলের কর্মীরা নানুরের চারকল গ্রামে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপর চড়াও হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে ।

এহেন পরিস্থিতিতে এলাকার সর্বসাধারণ তথা গরিব মানুষ যাদের পানীয় জলের ভরসা একমাত্র নল বাহিত জল এর ট্যাপ অথবা ওয়ার্ড ভিত্তিক একটি করে চাপা কল। সেই জলেতে ট্যাপ ও চাপা কলের হ্যান্ডেল খুলে নেওয়া এবং কলটি কে বিকল করে দেওয়া যে কত বড় অপরাধ। সে অপরাধের কোন ক্ষমা আছে বলে সাধারণ এলাকাবাসী তথা বীরভূমের মানুষ মনে করেন না।

তারা আজ শাসক দলের ওপর খুব্ধ হয়েই প্রশ্ন ছুড়েছেন। তারা কাজ ভালো করলে ফলাফল ভালো হতো। কিন্তু কাজ না করেই ভালো ফলের আশা। এটা সাধারন সচেতন মানুষ ভোটের বুথে প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু তাই বলে মানুষকে তীব্র গরমে দগ্ধেদগ্ধে পুড়িয়ে মেরে ফেলার যে চক্রান্ত শাসক দল করেছেন। তার ফল আগামী দিনে পেতেই হবে বলে বিক্ষোভ এর সঙ্গে জানাচ্ছেন বীরভূমের বিভিন্ন এলাকার পিপাসিত মানুষ।

এক প্রশ্নের উত্তরে জেলার তৃণমূল সভাপতি জানান, বিষয়টি অন্ধকারে। কে বা কারা এ ধরনের খারাপ কাজ করেছে, তার প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত আমি এ ধরনের কোনো অভিযোগ বিশ্বাস করি না এবং এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি এই অভিযোগে কোন কথা বলতে চাই না।

সম্পর্কিত খবর