বাংলা হান্ট ডেস্ক : বর্তমানে আমরা টাকা পয়সা লেনদেন হোক কিংবা জমা করা সমস্ত কিছুর জন্য ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল। এমনকি ফিক্সড ডিপোজিট করলেও ব্যাঙ্কের কথাই মাথায় আসে। তবে ব্যাংক ছাড়া গ্রাহকদের আরেকটি ভরসার জায়গা হচ্ছে পোস্ট অফিস (Post Office)। এখানেও মোটা অংকের টাকা ফিক্সড করে রাখলে তাতে বেশ ভালোই সুদ পাওয়া যাবে, সেইসাথে ভবিষ্যতেও কাজে লাগে। এই পোস্ট অফিস (Post Office) সরকার নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। ফলে এখানে টাকা পয়সা জমানো নিয়ে কোনো ভয় থাকে না। বরং এখানে টাকা জমালে ব্যাঙ্কের চেয়ে বেশি সুদ পাওয়া যায়। তবে এবার এই পোস্ট অফিস (Post Office) নিয়েই উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
মাত্র ৫০ পয়সা ফেরত না দেওয়ায়, ১৫০০০ টাকার জরিমানা পোস্ট অফিসের (Post Office)
গ্রাহককে মাত্র ৫০ পয়সা ফেরত দেয়নি পোস্ট অফিস (Post Office)। আর তার জন্য পোস্ট অফিসের (Post Office) কর্মকর্তাদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরালো ওই গ্রাহক। মাত্র ৫০ পয়সা না দেওয়ার জন্য ওই পোস্ট অফিসকে ১৫০০০ টাকার জরিমানা গুনতে হলো। বিষয়টি শুনে মাথায় হাত পড়লেও এমনই ঘটেছে ভারতীয় একটি পোস্ট অফিসের সাথে। এমনকি শীঘ্রই ঐ টাকা গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে চেন্নাইয়ের আদালত।
কোথায় ঘটেছে ঘটনাটি?
ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর গেরুগামপাক্কামে। যদিও এই ঘটনাটি আজকের নয় গত বছরের। গত বছর ৩রা ডিসেম্বর ঘটে ঘটনাটি। ঐদিন গেরুগামপাক্কামে বসবাসকারী মনশা পলিচাল্লুর নামের এক বাসিন্দা স্থানীয় ওই পোস্ট অফিসে গিয়েছিলেন রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানোর জন্য। আর এই চিঠি পাঠানোর জন্য তাকে চার্জ হিসেবে দিতে হয়েছিল ৩০ টাকা। কিন্তু এই কাজটি করার জন্য খরচ পরে ২৯ টাকা ৫০ পয়সা।
কিন্তু পোস্ট অফিস থেকে তাকে আর বাকি ৫০ পয়সা ফেরত দেওয়া হয়নি। এরপর ওখানে বসে থাকা কর্মচারীকে মনশা ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে। ওই কর্মচারী জানান, পোস্ট অফিসের সিস্টেমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিমাণটি ৩০ টাকা ধার্য করেছে, তাই ৫০ পয়সা আর ফেরত দেওয়া যাবে না। এই দেখে গ্রাহক অনলাইনে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু পোস্ট অফিসে তরফ থেকে জানানো হয় যে অনলাইন লেনদেনে সমস্যা আছে। তাই ৩০ টাকাই ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ডাব বিক্রি! সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া যুবকই আজ সংগীত গুরু
ওই গ্রাহক তার পাওনা টাকা ফেরত না পাওয়ায় উপভোক্তা আদালতে গিয়ে সরাসরি অভিযোগ জানান। তিনি অভিযোগে করেন, ইন্ডিয়া পোস্ট অফিসে দৈনিক লাখ লাখ টাকা লেনদেন হচ্ছে। এভাবে প্রাপ্ত টাকা ফেরত না দেওয়া বেআইনি। এমনকি এতে করে সরকারের রাজস্বের ক্ষতি করতে পারে। যদিও এ বিষয়ে পোস্ট অফিসের তরফ থেকেও মতামত পেশ করার সুযোগ দেয় আদালত। তবে সব শোনার পর মনশাকে অনলাইন অর্থ প্রদান করতে না দেওয়ার প্রশ্ন তোলে আদালত। এই বিষয়ে পোস্ট অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়, পোস্ট অফিসের ডিজিটাল পেমেন্ট মোডটি ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং ২০২৪ সালের মে মাসে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কমিশন জানায় যে, পোস্ট অফিস স্বীকার করেছে একটি সফ্টওয়্যারে ত্রুটির কারণে ওভারচার্জিং নিয়েছে। এমনকি এই বিষয় আদালত জানিয়েছে, ২০১৯ সালের উপভোক্তা সুরক্ষা আইনের ২(৪৭) ধারা অনুসারে এটি অসৎ ব্যবসা। তাই অবিলম্বে খুচরো সমস্যা মেটানোর জন্য সিস্টেমে বদল আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সবকিছু খতিয়ে দেখার পর মনশাকে মামলার খরচের জন্য ৫ হাজার টাকা ও মানসিক যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পোস্ট অফিসকে এই টাকা শীঘ্রই মনশার হাতে তুলে দিতে হবে ।