ছিলেন শিশুভিক্ষুক, হলেন চিকিৎসক!এও কী সম্ভব? অভাবকে হেলায় হারিয়ে বেনজির কীর্তি এই তরুণীর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : পিঙ্কি হরিয়ান (Pinki Hariyan), ধর্মশালায় ভিক্ষা করে বেড়াতেন। পরিবারকে নিয়ে ময়লারূপে খাবারের খোঁজ করতেন। সেই জীবন থেকে বেরিয়ে এসে একজন সফল চিকিৎসক পিঙ্কি হরিয়ান (Pinki Hariyan)। তাঁর এই পথনির্দেশনায় সহায়তা করেছেন তিব্বতি শরণার্থী ভিক্ষু লোবসাং জাম্যাং।

খবরের শিরোনামে পিঙ্কি হরিয়ান (Pinki Hariyan)

ধর্মশালার একটি দাতব্য সংস্থার পরিচালক লোবসাং জাম্যাং ২০০৪ সালে মেকলয়েডগঞ্জে রাস্তায় ভিক্ষা (Begger) করতে দেখেন পিঙ্কিকে। তিনি পিঙ্কির বাবাকে রাজি করিয়ে , তাকে বস্তি থেকে তুলে এনে ধর্মশালার দয়ানন্দ পাবলিক স্কুলে ভর্তি করে দেন। প্রথম প্রথম পরিবারকে মিস করতেন পিঙ্কি। কিন্তু পড়াশোনায় গাফিলতি করেননি কখনো।

Pinki Hariyan

দীর্ঘ কুড়ি বছর লড়াইয়ের পর সফল চিকিৎসক (Doctor) পিঙ্কি। তাঁর সেই অধ্যাবসায় তাঁকে দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় সফলতা এনে দেয়। পরে, সর্বভারতীয় মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা NEET- এ সাফল্য পান। তবে সরকারি মেডিকেল কলেজের সুযোগ না মেলায় বেসরকারি কলেজে প্রচুর খরচের কারণে সেখানেই থামে তাঁর পড়াশোনা।

আরোও পড়ুন : পাকিস্তানি সিরিয়ালের সঙ্গে বাংলার তুলনা, ছোটপর্দায় ভুল হচ্ছে কোথায়? সুদীপা বললেন, ‘শাঁখা সিঁদুরের দিব্বি দিয়ে…’

এরপর ইউকের দাতব্য সংস্থা টং-লেন চারিটেবল ট্রাস্টের সহযোগিতা নিয়ে ২০১৮ সালে পিঙ্কি চীনের এক বিখ্যাত মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে ধর্মশালায় ফেরেন।ভারতে মেডিকেল প্র্যাকটিসের অনুমোদন পেতে FMGE পরীক্ষার পড়াশোনা করছেন। দিদিকে দেখে তার ভাই বোনেরাও সাফল্য পেতে পড়াশোনায় মনোযোগী হয়েছে, ভর্তি হয়েছে বিদ্যালয়ে।

আরোও পড়ুন : বড় ঘোষণা করল ISRO! ২০২৬ সাল পর্যন্ত স্থগিত ভারতের গগনযান মিশন, কারণ জানালেন সোমনাথ

পিঙ্কি জানান,”দারিদ্র্য ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমার পরিবারকে অসহায় অবস্থায় দেখাটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। স্কুলে প্রবেশ করার পর, আমি জীবনে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।” শৈশব প্রসঙ্গে পিঙ্কি জানান, “স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময়, আমি চার বছর বয়সে সাক্ষাৎকারে ডাক্তার হতে চাই বলে জানিয়েছিলাম। তখন ডাক্তার আসলে কী কাজ করেন, তা জানতাম না, কিন্তু সবসময় আমার সম্প্রদায়কে সাহায্য করতে চেয়েছিলাম।”

pinki haryan.jfif

জাম্যাং-এর পাশে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,”জাম্যাং-এর একটি স্বপ্ন ছিল দরিদ্র ও অনাথ শিশুদের শিক্ষার মাধ্যমে সম্মানের জীবন দেওয়া। তাঁর বিশ্বাস আমাকে অনুপ্রাণিত করত। শুধু আমি নয়, তাঁর সহায়তায় অনেকেই আজ জীবনে বড় সাফল্য অর্জন করেছেন”। লোবসাং জাম্যাং-এর উদ্যোগে বর্তমানে রাস্তার শিশুদের মধ্যে কেউ হয়েছেন চিকিৎসক কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার কেউ আবার সাংবাদিক। তাদের মধ্যেই একজন হলেন পিঙ্কি।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর