বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিরল থেকে বিরলতম ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তের ফাঁসির নির্দেশ স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ২০১৬ সালে রাঁচির বিটেক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করার পর বিবস্ত্র করে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত রাহুল রাজ ওরফে রকির সাজা স্থগিত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। অভিযুক্ত রাহুল এই দুই নামে ছাড়াও কোথাও রা, তো কোথাও অঙ্কিত, আবার কোথাও শ্রীবাস্তব কিংবা আরিয়ান নামেও পরিচিত।
কুখ্যাত ধর্ষকের ফাঁসি স্থগিত করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)
রাঁচির ওই নৃশংস ধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে আরো একাধিক ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি পঙ্কজ মিত্তল এবং বিচারপতি উজ্জল ভূইঁয়ার বেঞ্চ এই মামলার শুনানি চলাকালীন নিম্ন আদালত এবং ঝাড়খন্ড হাইকোর্ট থেকে এই মামলার সমস্ত রেকর্ড চেয়ে পাঠিয়েছেন।
রাঁচি নির্ভয়া কান্ড নাম পরিচিত এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ১৫ এবং ১৬ই ডিসেম্বর। ১৯ বছরের বিটেক পড়ুয়া এক ছাত্রী তার বোনের সাথে এক বস্তিতে থাকতেন। সাথে তাঁদের বাবা-মা’ও থাকতেন। তবে ১৫ ডিসেম্বর বাড়িতে একাই ছিল ওই ছাত্রী। ওইদিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ কলেজ থেকে বাড়িতে ফিরেছিল ওই তরুণী।
সেদিন গোটা দিনটা তাকে ফলো করেছিল অভিযুক্ত রাহুল। কিন্তু একথা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি ছাত্রীটি। ১৬ ডিসেম্বর ভোর চারটের দিকে রাহুল ওই তরুণীর বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে। তারপর তাকে ধর্ষণ করে। ছাত্রীটি অজ্ঞান হয়ে গেলে তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে।এখানেই শেষ নয় এরপর তাকে মৃত অবস্থায় সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে তার গায়ে জ্বালানি তেল ঢেলে ঘরের মধ্যেই আগুনে পুড়িয়ে মারে ওই অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: সহপাঠীরাই..! স্কুলের মধ্যে থেকেই উদ্ধার ছাত্রের দেহ, হাড়হিম করা ঘটনায় শোরগোল
এছাড়াও যুবতীর শরীরের সমস্ত জামাকাপড় অন্য একটি ঘরের মধ্যে জ্বালিয়ে দেয় সে। এই সমস্ত ঘটনা ঘটানোর পর দরজা বন্ধ করেই সেখান দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত। এই ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল রাঁচির লোকজন। পরে এই মামলা তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল সিবিআই এর হাতে। প্রায় ৩০০ জন মানুষের জিজ্ঞাসাবাদ করা পর মোবাইল কল ডাম্পের সাহায্যে রাহুলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল।
রাহুলের রক্তের স্যাম্পেল নেওয়া হয়েছিল তার মায়ের ডিএনএ টেস্ট থেকে। কারণ যখন তার সন্ধানে পুলিশ তার গ্রামে গিয়েছিল তখন সে অন্য একটি ধর্ষণের ঘটনায় লাখনৌয়ের জেলে বন্দি ছিল রাহুলের বিরুদ্ধে চারশিটে দাখিল করেছিল সিবিআই। রাঁচিভিত্তিক সিবিআই আদালত তাকে ২০১৯ এর ২০ ডিসেম্বর দোষী সাব্যস্ত করে, মামলাটিকে বিরলতম বিরলতর কেস বলে জানিয়েছিল। এরপর ২০১৯ এর ২১ ডিসেম্বর তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২৪ এর ১৯ সেপ্টেম্বর ঝারখান্ড হাইকোর্ট তার সাজা বহাল রাখে।