‘কী তদন্ত করছেন?’ রিপোর্ট দেখে ‘ক্ষুব্ধ’ বিচারপতি! কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে পড়ল পুলিশ। এদিন পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির (Justice Joymalya Bagchi) ডিভিশন বেঞ্চ। ‘আপনারা কী তদন্ত করছেন?’ পুলিশ হেফাজতে অত্যাচারের মামলার শুনানিতে এদিন জানতে চায় উচ্চ আদালত।

বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)!

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত একটি মিছিল থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কন্যাকে উদ্দেশ্য করে কটু কথা বলার অভিযোগে দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। রমা দাস ও রেবেকা মোল্লা নামের সেই দুই মহিলার জামিন হয়ে গেলেও তাঁরা পুলিশ হেফাজতে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

এই ঘটনায় উচ্চ আদালতের তরফ থেকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাল্টা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গেই বলা হয়, কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) তদন্তের রিপোর্ট জমা দেবে সিট। এদিন সেই রিপোর্ট দেখেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ।

আরও পড়ুনঃ একসঙ্গে ছুটিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ ২৫ জন বিচারপতি! হঠাৎ কী হল? শোরগোল দেশে

রাজ্যের আইনজীবী এদিন বলেন, ‘এনাদের অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে অত্যাচার করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আমরা যে তথ্য পেয়েছি সেটা রিপোর্টে লিখেছি। সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেশ করতে আমাদের আরও ১৪ দিন লাগবে। চিকিৎসকদের ও বাকিদের বয়ান রেকর্ড করা হবে’। একথা শোনার পর বিচারপতি বাগচি জিজ্ঞেস করেন, ‘যাকে মারধর করা হয়েছে, তাঁর বয়ান রেকর্ড হয়েছে? রমা দাসের বয়ান রেকর্ড হয়েছে? ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ডাকা হয়েছিল?’

উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, এখনও অবধি তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়নি। তদন্ত এখনও চলছে। এরপরেই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাস্টিস বাগচি। সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনারা কী তদন্ত করছেন? কারা চিকিৎসক? কারা সাক্ষী? যাকে মারধর করা হয়েছে তিনিই তো সাক্ষী। প্রথমে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা উচিত। তিনি যাকে অভিযুক্ত বলবেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। যারা সাক্ষী, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত’।

Calcutta High Court

বিচারপতি বাগচি আরও বলেন, ‘রিপোর্ট পেশ করুন। রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। রমা দাস কী ক্রাইম করেছেন এটা কী তার ওপর তদন্ত? আপত্তিকর ভিডিওর ওপর ভিত্তি করে তদন্ত করা হয়েছে? অভিযোগ আসলে কী ছিল? হেফাজতে নিয়ে অত্যাচারের বিষয়টি আছে?’

রাজ্যের আইনজীবী হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জানান, একবার আক্রান্তকে নিমতা থানায় ডাকা হয়েছিল। সিট সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত করে দেখছে। সব বক্তব্য শোনার পর জাস্টিস বাগচির নির্দেশ, আপত্তিকর ভিডিও এবং অন্যান্য বিষয়ে অ্যাডিশনাল চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর অফ সিটকে ফের তদন্ত রিপোর্ট জমা করতে হবে। সিট আদালতে সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেবে। ১৪ দিন পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর