বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোটে কারচুপির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। নির্বাচন মিটলে বিরোধীদের তরফ থেকে প্রায়শয়ই এই অভিযোগ তোলা হয়। স্বচ্ছতার প্রশ্নে তাই একাধিকবার ইভিএমের (EVM) বদলে ব্যালটে ভোট করানো দাবি তুলেছেন তারা। এই আবহে এবার ইভিএম নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission) কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চের তরফ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হল।
নির্বাচন কমিশনকে কী নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)?
ইভিএম নিয়ে মামলা করেছিল অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস। ভোট পরবর্তী তথ্য যাচাইয়ের কী কী বন্দোবস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন, সেই বিষয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছিল। ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর যাতে আসল তথ্য মুছে না দেওয়া হয়, সেই নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তারা। এবার তার প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল শীর্ষ আদালত।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মসের তরফ থেকে আদালতে সওয়াল করছিলেন অভিজ্ঞ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকলের অধীন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নির্বাচন কমিশন চলুক। কাউকে ইভিএমের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারে কোনও প্রকার বিকৃতি ঘটানো হয়েছে কিনা সেটা দেখা প্রয়োজন’।
আরও পড়ুনঃ সহকর্মীর সঙ্গে স্বামীর পরকীয়ার অভিযোগ! বড় নির্দেশ দিয়ে দিল হাইকোর্ট! কার পক্ষে রায় এল?
এবার সেই প্রেক্ষিতেই বড় নির্দেশ দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ভোট সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরেও ইভিএমের আসল তথ্য মুছে ফেলা যাবে না বলে জানাল শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে ইভিএম পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, এদিন প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘একবার ভোট গোনা হলে, পেপার ট্রেল থাকবে নাকি বের করে নেওয়া হবে?’ জবাবে প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘ইভিএম-ও রক্ষা করতে হবে। পেপার ট্রেল রেখে দেওয়ারই কথা’।
সিজেআই খান্না (CJI Sanjiv Khanna) এদিন জিজ্ঞেস করেন, ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর ইভিএম নিয়ে কী কী নির্দেশিকা আছে? নির্বাচন কমিশনকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি। একইসঙ্গে তাঁর নির্দেশ, আপাতত ইভিএমের কোনও তথ্য মুছে ফেলা যাবে না। সেই সঙ্গেই নতুন কোনও তথ্য আপলোড করা যাবে না। ভোট মিটে যাওয়ার পর ইভিএমের মেমোরি মুছে দেওয়ার পদ্ধতি ও ভোটের পর কী কী প্রক্রিয়া শুরু হয়, তার বিস্তারিত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনকে।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনও বৈরিতার ব্যাপার নয়। তবে পরাজিত প্রার্থী যদি কৈফিয়ত চান, ইঞ্জিনিয়ার প্রমাণ দিতে পারবেন যে কোনও বিকৃতি হয়নি’। জানা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভোট সম্পন্ন হওয়ার পর নির্বাচনী প্রতীক থেকে শুরু করে তথ্য ভারত ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়াররা অন্যত্র মজুত রেখে দেন। একথা শুনে প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন, আসল তথ্য কেন মুছে ফেলা হল? ইভিএমের তথ্য না মোছার নির্দেশ দেন সিজেআই খান্না। আগামী ১৭ মার্চ ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।