বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভাগীরথী গ্রাস করছে নবাব সিরাজদৌল্লার সম্পত্তি (Nawab’s property)! গঙ্গার পাড়ে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার (Nawab Sirajuddaula) তৈরি হীরাঝিল প্রাসাদের শেষ অংশ টুকু সংরক্ষণ করার আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। এবার সেই মামলায় হীরাঝিল প্রাসাদ ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
জনস্বার্থ মামলায় কী নির্দেশ হাইকোর্টের? (Calcutta High Court)
আদালতের নির্দেশ, ওই জায়গাটি এখন কী অবস্থায় রয়েছে সেই নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্যকে। পাশাপাশি হীরাঝিল প্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ রক্ষা করা যায় কি না তা নিয়েও রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা উঠেছিল।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা উঠলে হাইকোর্টের নির্দেশ, মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের নেতৃত্বে একটি দল ওই জায়গাটি পরিদর্শন করতে হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের এক জন করে প্রতিনিধি এবং রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধি সেই দলে থাকবেন। দলের আহ্বায়ক হবেন জেলাশাসক।
নির্দেশে আদালত জানিয়েছে, ওই দলকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারবে মামলাকারী ট্রাস্ট। পরিদর্শন দলকে আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর আগের শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে সওয়াল করেন, ওই স্থাপত্যের অবশিষ্টাংশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এরপরই এই মামলায় রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়েছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
এদিনের শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীর সওয়াল করেন, ১৭৫৮ সাল নাগাদ ওই প্রাসাদ ধ্বংস করেছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ব্রিটিশ শাসনকালের আগেই সম্পূর্ণভাবে হীরাঝিল ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ইতিহাসের আর কোনও অংশই সেখানে বেঁচে নেই। মামলাকারীদের পালটা যুক্তি, ওই স্থাপত্যের কিছু অংশ এখনও অবশিষ্ট রয়েছে। সেই অংশ সংরক্ষণ করতে রাজ্যের পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ফের শিরোনামে RG Kar! চিকিৎসা না পেয়ে ৩ ঘণ্টা পড়ে রইল রোগী! অভিযুক্ত জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট
এর আগে এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ১৭৫৮ সালে বাংলার শেষ নবাব সিরাজদৌল্লার সম্পত্তি নষ্ট করে ফেলেছিল।” বাকি ৯ বিঘা জমি অবশিষ্ট রয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যেটুকু ইতিহাস আছে, সেটা রক্ষা না করতে পারলে এই ৯ বিঘাও থাকবে না।” একই সাথে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের ভূমিকা, নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।