বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছরদুয়েক আগে বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুইতে যে গণহত্যা হয়েছিল সেই ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত ছিলেন ছিল প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন। ওই ঘটনার পর তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। নিন্ম আদালতের পর এবার কলকাতা হাইকোর্টেও (Calcutta High Court) খারিজ হয়ে গেল এই আনারুল হোসেনের জামিনের আবেদন। প্রসঙ্গত এর আগে বীরভূমের রামপুরহাট আদালতও তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।
হাইকোর্টে (Calcutta High Court) খারিজ জামিনের আবেদন
কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দুই বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং স্মিতা দাস দে’র বেঞ্চে আনারুলের জামিনের মামলার শুনানি ছিল। এদিন হাইকোর্টে আনারুলের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। তিনি আদালতে জানিয়েছেন ঘটনার দিন আনারুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ওই সময় হাসপাতালে তাঁর উপস্থিতির প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে।
সিবিআই-এর আইনজীবি ধীরাজ ত্রিবেদী অবশ্য এই দাবি মানতে রাজি নন। আদালতে (Calcutta High Court) তিনি পাল্টা যুক্তি দিয়ে জানিয়েছেন বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ছিলেন আনারুল শেখ। সে এই ঘটনার মূল কুচক্রী। তার নির্দেশেই পুরো ঘটনা ঘটেছিল। আর সিসিটিভি ফুটেজটি আনারুল নিজের সুবিধার জন্য হাতিয়ার করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন সিবিআই-এর ওই আইনজীবী।
আদালতের (Calcutta High Court) এদিন উভয়পক্ষের সাওয়াল জবাব শেষে বগটুই কান্ডের অভিযুক্ত আনারুল শেখের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ২ বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ ৷ ফলে জামিন পেতে হলে এখন সুপ্রিম কোর্টেই আবেদন করতে হবে আনারুলকে৷
আরও পড়ুন: ‘আমি দুর্গা পুজো করি, কালী পুজো করি, তখন তো কেউ …’ ফুরফুরায় গিয়ে ফুঁসে উঠলেন মমতা
ঠিক কী ঘটেছিল?
২০২২ সালের সেই অভিশপ্ত রাতে বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুইতে বেশ কয়েকটি বাড়ি আগুনে পুড়তে শুরু করেছিল। আগুন নেভানোর পর জ্বলে যাওয়া বাড়ি থেকে পুরুষ, মহিলা ও শিশু-সহ মোট দশজনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল ৷ এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় সর্বত্র ৷ তৃণমূল কংগ্রেস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিরোধীরা৷
জানা যায় বগটুইতে গণহত্যার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই রামপুরহাট থানার ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বগটুই মোড়ে বোমা মেরে হত্যা করা হয়েছিল এলাকার তৃণমূল নেতা ও স্থানীয় উপপ্রধান ভাদু শেখকে। অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই হয়েছিল হত্যা করা ভাদু শেখকে৷ তারই পালটা হিসেবে বগটুইয়ের গণহত্যার ঘটনা ঘটে ৷ তখনই উঠে আসে স্থানীয় তৃণমূল নেতা আনারুল শেখের নাম৷
বিরোধীদের দাবি মেনে পরে এই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। হাইকোর্টে এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই মামলায় ন’জন অভিযুক্তের মধ্যে এখনও ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি রয়েছে। সূত্রের খবর এই ঘটনায় মোট ১৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে ৷ এখনও ১২৪ জনের সাক্ষী নেওয়া বাকি রয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, এঁদের মধ্যে ছ’জন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনকে নাকি ভয় দেখিয়ে রাখা হয়েছে।