আধপেটা খেয়ে খালি পায়ে স্কুলে যাওয়া ছেলেটা আজ ISRO-র প্রধান! কে শিভান নিজেই যেন রূপকথা

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ভারতের মাথা পুরো বিশ্বের কাছে উঁচু করার অন্যতম একজন কারিগর হলেন কে শিভান। তিনিই ইসরোর  (Indian Space Research Organisation) চেয়ারম্যান। ১৯৫৭ সালের ১৪ এপ্রিল তামিলনাড়ুর মেলা সারাক্কালভিলাই গ্রামে এক অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন কে শিভান। ভারতের এই ‘রকেট ম্যান’-র জীবন মোটেও স্বচ্ছল ছিল না। হত দরিদ্র পরিবারে তাঁর জন্ম, বেড়ে ওঠা এবং পড়াশুনা। তাঁর নেতৃত্বেই চন্দ্রযান ২ অভিযান সম্পন্ন হয়েছিল। নতুন ইতিহাস গড়তে গড়তে সামান্যর জন্য পুরোপুরি সফলতার মুখ দেখতে পারেননি তিনি। তদুপরি এদেশের সাথে সাথে গোটা বিশ্ব তাঁকে একনামে চেনে।

17 Facts About India's 'Rocket Man' K. Sivan A Farmer's Son Who Became ISRO Chief

বাল্যবেলায় এই কে শিভানকে (K Shivan) খালি পায়ে আধপেটা খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছিল। কলেজে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ছিল না জুতো জোড়াও। খালি পায়েই স্কুলে যেতেন তিনি। সেখান থেকে ফিরে চলে যেতেন বাবার চাষের কাজে হাত লাগাতে। আমের সময়ে বাবার দোকানও সামলাছেন তিনি। এই শিভান প্রথম জুতো পরে দেন মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হওয়ার পর।

Who is ISRO Chairman K Sivan? Check out lesser known facts about him | Science News – India TV

এমনকি কলেজে যাওয়ার সময় অনেক সময় থাকতো না ট্রাউজারও, তাই ধুতি পরেই অধিকাংশ সময় কলেজে যেতে হয়েছে তাকে। অত্যন্ত প্রান্তিক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও, বাবা-মা তিন বেলা চেষ্টা করে গিয়েছেন তাঁদেরকে খাওয়াতে। এই শিভান তাঁর অতীত স্মৃতি চারণা করতে গিয়ে এও বলেন, ‘সবাই ভালো কলেজ দেখে ভর্তি হয়। তবে আমার প্রথম ও একমাত্র শর্ত ছিল, যে কলেজ কাছে হবে তাতেই ভর্তি হব আমি (Kailasavadivoo Sivan)।

India's 'Rocket Man' K Sivan: Facts on the farmer's son who went on to head ISRO - Education Today News

ভারতের এই রকেট ম্যানের আগাগোড়া স্বপ্ন ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। তবে বাঁধ সেধেছিল বাবার দারিদ্রতায়। তাই বাবার কথায় ভর্তি হলেন সাইন্স কলেজে। তবে বাবার মন জয় করতে তিনিও আদ্যোপান্ত চেষ্টাও করেছিলেন সেবার। প্রায় একসপ্তাহ খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে রেখেছিলেন তিনি। তবে তার মাঝে তাঁর নিজেরই মন বদলে যায়। পরে অবশ্য সেই বাবাই শিভানের অঙ্কে স্নাতক হওয়ার পর, জমি-জায়গা বিক্রি করে দিয়ে শিভানকে ভর্তি করান ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে।

Received requests from Indian start-ups': ISRO Chairman Dr. K Sivan on Space opening up to private sector

তারপর কলেজ পাশ করে নিজের মনের মত জায়গায় কাজ পাচ্ছিলেন না শিবান। প্রতিযোগিতার মাত্রাও ছিল তীব্র। শেষে আইআইএসসি পাশের পর তিনি চাকরি পান ইসরোতে (ISRO)। সংসারের খরচ কমাতে ছাত্রাবস্থার বেশির ভাগটাই ধুতি পরে কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এই দারিদ্র লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি তাঁকে। যা পাননি তা নিয়ে শোক না করে যা পেয়েছেন সেগুলো নিয়েই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি বলেও জানান তিনি। শেষে চন্দ্রযান ২ এর ব্যর্থতার পর এই বিজ্ঞানী বলেছিলেন, ‘যতবারই জীবনের কাছ থেকে তিনি কিছু চেয়েছেন, জীবন তাঁকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।’

সম্পর্কিত খবর