বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুলের জের! এবার কী তবে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া চাকরি হাতছাড়া হতে চলেছে ববিতারও? এই প্রশ্নই এখন উঁকি দিচ্ছে। সূত্রের খবর, ববিতা সরকার (Babita Sarkar) নয়, শিলিগুড়ির অনামিকা রায়ের (Anamika Roy) পক্ষেই সওয়াল কমিশনের। নিজের আবেদনপত্রে অ্যাকাডেমিক স্কোর ভুল লিখেছিলেন ববিতা, আর তার জেরেই মিলেছিল শিক্ষকের চাকরি। ভুলবশত দেওয়া বাড়তি ২ নম্বর প্রত্যাহার করা হলে ববিতার চাকরি প্রকৃতপক্ষে পাওয়ার কথা অনামিকার। সেই মর্মেই আজ হলফনামা জমা দিতে চলেছে কমিশন।
চলে যাই ঘটনার গোড়ায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বহুল চর্চিত নাম এই ববিতা সরকার। তাঁর নামেই এসএসসি (SSC) দুর্নীতিকাণ্ডে সামনে এসেছিল। রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে স্কুলের চাকরি পেয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। এরপর আদালতে আইনি লড়াই লড়ে তাঁকে সরিয়ে সরিয়ে সেই জায়গা দখল করেছিল ববিতা। শুধু তাই নয় বিচারপতির নির্দেশে পেয়েছিলেন অঙ্কিতার চাকরির ১৬ লক্ষ টাকাও।
এরপর সবকিছু ঠিক চলছিল। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে চাকরিও করছেন ববিতা। তবে এরমধ্যেই প্রকাশ্যে নম্বর-বিভ্রাটের ঘটনা। ২ নম্বর বেশি দেখানোর ফলেই নাকি সেই চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা। এই খবর সামনে আসতেই শিলিগুড়ির বাসিন্দা আরেক চাকরিপ্রার্থী অনামিকা রায়ের দাবি, চাকরিটা তাঁর পাওনা ছিল। অ্যাকাডেমিক স্কোরে ভুল তথ্যের জেরে তাঁর চাকরি দেওয়া হয়েছে ববিতাকে। এরপর এই দাবি নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিকট মামলাও দায়ের করেন তিঁনি। তাঁর আইনজীবীর দাবি, স্নাতকে শতাংশের হারে গড় ৫৫ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। কিন্তু ববিতা আবেদনপত্রে ৬০ শতাংশ লিখেছেন। সেজন্যই অ্যাকাডেমিক স্কোরে অতিরিক্ত ২ নম্বর পেয়ে তিঁনি অঙ্কিতার চাকরি পেয়েছেন।
থেমে নেই ববিতাও। নিজের চাকরি বাঁচাতে তাঁর পালটা দাবি , মূল্যায়নের সময় এসএসসি তাঁকে ভুলবশত ২ নম্বর অতিরিক্ত দিয়েছে। এই ভুলের জন্য এসএসসির তরফের ব্যাখ্যা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিঁনিও। গতবছর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসি চেয়ারম্যান হাইকোর্টে জানান, ববিতা সরকারের সাবজেক্ট টেস্ট নম্বর ৩৬, অ্যাকাডেমিক স্কোর ৩৩ আর পার্সোনালিটি টেস্টে প্রাপ্ত নম্বর ০৮। সর্বমোট ৭৭। এরপরই সমস্ত নথি খতিয়ে আদালতের নির্দেশে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি দেওয়া হয় ববিতা সরকারকে। কিন্তু এবার অ্যাকাডেমিক স্কোর বিভ্রাটের জেরে তাঁর লড়াই করে পাওয়া চাকরির ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত।